Advertisement
Advertisement
Bangladesh

অশান্ত বাংলাদেশে কবর খুঁড়ে পোড়ানো হল পীরের দেহ! মৌলবাদী আক্রমণের নিন্দায় সরব তসলিমা

'তৌহিদি জনতা'র ব্যানার নিয়ে 'নুরুল পাগলা'র দরবারে দফায় দফায় হামলা চালায় মৌলবাদীরা।

Bangladesh deadbody brought out of grave set ablaze taslima nasrin attack government
Published by: Anustup Roy Barman
  • Posted:September 6, 2025 11:39 am
  • Updated:September 6, 2025 2:23 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই টানা উত্তেজনা চলছে বাংলাদশে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেই মাথাচাড়া দিচ্ছে মৌলবাদী শক্তি। চরমপন্থার আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ। ঘটছে একের পর এক ভয়াবহ ঘটনা। এবার গোয়ালন্দে এক মৃত ধর্মগুরুর দেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তথাকথিত ‘তৌহিদি জনতা’র বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মুখ পুড়েছে ইউনুস প্রশাসনের। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল সমালোচনা। নিজের ফেসবুক ওয়ালে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিতর্কিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। চাপের মুখে দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন সরকারি উপদেষ্টারা।

Advertisement

জানা গিয়েছে, গোয়ালন্দের রাজবাড়ি এলাকায়, স্থানীয় এক পীর নুরুল হক ওরফে ‘নুরুল পাগলা’র মৃত্যু হয় সম্প্রতি। তাঁর দেহ কবর দেওয়া হয় মাটি থেকে কিছুটা উপরে। কাবা শরিফের আদলে তৈরি হয় সমাধিটি। এতেই দানা বাঁধে বিতর্ক। শুক্রবার ‘তৌহিদি জনতা’ নামের ব্যানার নিয়ে ‘নুরুল পাগলা’র দরবারে দফায় দফায় হামলা চালায় মৌলবাদীরা। নুরুল হকের বাড়ি এবং দরবারে ভাঙচুর চালানো হয়। দরজা ভেঙে ঢুকে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা।

জানা গিয়েছে, ঘটনার আগে থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিল পুলিশ। কিন্তু বিপুল জনতার চাপ সামলাতে ব্যর্থ হন তাঁরা। পরবর্তী সময়ে র‍্যাব এবং সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিত সামলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু দ্বিতীয় দফার হামলায় নুরুল হকে দেহ কবর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাস্তার উপরেই পুড়িয়ে ফেলা হয়। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২২ জন। একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।

ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই ঘটনার নিন্দা করেছে। ইউনুসের সরকার জানিয়েছে, “এই বর্বরতা সহ্য করা হবে না। আইনের শাসন বজায় রাখতে এবং প্রতিটি মানুষের জীবনের পবিত্রতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রশাসন।” সমালোচকদের কথায়, মুখে আশ্বাস দিলেও আদতে মৌলবাদীদের উপর লাগাম টানতে ব্যর্থ প্রশাসন।   

এই ঘটনার প্রতিবাদে সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘ওয়াহাবি জঙ্গিরা গোয়ালন্দের এক স্থানীয় পীরের লাশ কবর থেকে তুলে এনে পুড়িয়ে দিয়েছে। ওই পীরের যেন কোনও মাজার না বানাতে পারে ভক্তরা। একটি মৃতদেহকে মাটির তলার চাপা দেওয়া হোক, কী পোড়ানো হোক, কী শব ব্যবচ্ছেদ কক্ষে নিয়ে কাটাছেঁড়া হোক, কোনও ফারাক নেই। অন্তত আমার কাছে নেই। মানুষ ততক্ষণই মানুষ যতক্ষণ শরীরে প্রাণ আছে। মৃতদেহ নিয়ে আবেগ ধার্মিকদের, ধর্মান্ধদের। তারা আত্মায়, পরলোকে, পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে বলেই লাশকে নিতান্তই লাশ বলে ভাবে না।’ তিনি আরও লেখেন, ‘ওয়াহাবি জঙ্গিরা মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। তারা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। কারও কথা বা কাজ পছন্দ না হলে তাকে আর বাঁচতে দিচ্ছে না। তাদের অপরাধের কোনও শাস্তিও হচ্ছে না। মবোক্রেসির যুগে জঙ্গিরা হিরো।’ এই ঘটনার নিন্দা করে তিনি লেখেন, ‘ইসলাম যতদিন আছে, ততদিন জি হা দি জ ঙ্গি থাকবেই। এ কেউ মানুক বা না মানুক।’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement