সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনার পতনের পর মুজিব মুছতে তৎপর মহম্মদ ইউনুসের সরকার। শিক্ষাক্ষেত্র, হাসপাতাল, ফিল্মসিটি থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম পালটে ফেলা হয়েছে। নাম পরিবর্তন করা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের। কিন্তু এখন সেই নাম পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের (একাংশ) শিক্ষার্থীরা। জমা দিয়েছেন স্মারকলিপিও। ফলে প্রশ্ন উঠছে, মুজিবের ফেরানোর দাবিতেই কি ইউনুসের পতন ঘনিয়ে আসছে?
এই মুহূর্তে ‘নতুন’ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ছুড়ে ফেলা হচ্ছে ডাস্টবিনে। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুজিবের বাড়ি। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে সরেছে তাঁর ছবি। শুধু তাই নয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের নবনির্মিত হলের নাম রাখা হয়েছে ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে। যাকে চট্টগ্রামের সবচেয়ে কুখ্যাত গণহত্যাকারী রাজাকার হিসাবেই চেনে সকলে। কিন্তু এখন উলটো হাওয়া বইছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এরপর চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ৪টি আবাসিক হলের নামফলক মুছে দেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নতুন নামকরণের দাবি জানান তাঁরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ মার্চ শেখ রাসেল হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম বাতিল করে সিন্ডিকেট। সম্প্রতি এসব স্থাপনার নতুন নামকরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজনদের কাছ থেকে নাম প্রস্তাবের আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট (একাংশ) উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়। মুজিবের নাম পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি (একাংশ) ফাইজা মেহজাবিনের সই করা ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই আন্দোলন একই মুক্তির বোধ থেকে উৎসারিত। ৭১ ও ২৪ প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং একই মুক্তির বোধের পরিচায়ক। তাই বঙ্গবন্ধুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে জয় লাভ করেছেন, তাঁকে অস্বীকার করে ৭১ ও ২৪ কে প্রতিদ্বন্দ্বীর অবস্থানে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা প্রকৃতপক্ষে স্বৈরাচারী রেজিমেরই মনোবৃত্তি। এই অপচেষ্টা পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে যাবে, যা আমরা সর্বকালের (৭১ থেকে ২৪) মুক্তির বোধের প্রতি যাঁরা শ্রদ্ধাশীল—তাঁরা হতে দিতে পারি না।’এছাড়া ওই স্মারকলিপিতে বাকি তিনটি স্থাপনার নতুন নামকরণেরও প্রস্তাব দিয়েছেন সংগঠনটির শিক্ষার্থীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.