নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, মুজিব, স্বাধীনতা – সবই আজ বিস্মৃতির অতলে। ৩০ লক্ষ মানুষের রক্ত লেগে যে হাতে, সেই হাত ধরেই আজকের হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ নতুন করে সম্পর্কের পুনরুজ্জীবনের আশা দেখছে। সোমবার ঢাকা সফররত পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেই আশাই ব্যক্ত করলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। এদিন তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়। ইশাক দার যুব সংযোগ বৃদ্ধি, সংযোগ বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো আলোচনা করেন। তাঁদের আলোচনায় এ অঞ্চলের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হয়।
ইশাক দার সোমবার ইউনুসের সঙ্গে দেখা করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। ঢাকা সফরে দারুণ ব্যবস্থা এবং সফরকালে তাঁকে ও তাঁর প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। এর আগে, পাকিস্তানের বিদেশ দপ্তর ইশাকের দু’দিনের সফরকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ বলে অভিহিত করেছে। এটি ১৩ বছরের মধ্যে কোনও পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার ৩৬ ঘণ্টার বাংলাদেশ সফরকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হিসেবে অভিহিত করেন।
তবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ইশাক দারের দাবির সঙ্গে ঢাকা একমত নয় বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের উপদেষ্টা বলেন, ”একমত হলে তো সমস্যা সমাধান হয়ে যেত। বৈঠকে আমরা আমাদের অবস্থান বলেছি, তারা তাদের অবস্থান বলেছে। ৫৪ বছরের সমস্যা নিশ্চয়ই একদিনের বৈঠকে সমাধান হবে না। আমরা পরস্পরের অবস্থান তুলে ধরেছি। এর মধ্যে আমরা তিনটি বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছি। যারমধ্যে একটি বিষয়ে খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে। তবে দুই পক্ষই একমত হয়েছে যে, অমীমাংসিত বিষয়গুলো আমাদের সমাধান করতে হবে। আমরা চাই, যে গণহত্যা হয়েছে সেটার জন্য তারা দুঃখপ্রকাশ করুক, মাফ চাক।” তৌহিদ হোসেনের অভিযোগ, গত সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। তারা বর্তমানে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চাইছেন। এ থেকেই স্পষ্ট, ইসলামাবাদের সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে ভারতকে ঠারেঠোরে বার্তা দিতে চাইছে ঢাকা।
গত শনিবার দুপুরে ঢাকা সফরে এসেছিলেন ইশাক দার। রবিবার দিবাগত রাতে তিনি ঢাকা ছাড়েন। বৈঠক করার পাশাপাশি ইশাক দার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রাতরাশ বৈঠক করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিনের সঙ্গে। রাজনৈতিক যোগাযোগের অংশ হিসেবে ইশাক দার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জামাত-ই-ইসলামির আমির শফিকুর রহমানকে দেখতে তাঁদের বাসায় যান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.