সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। স্থায়ী সরকার গঠনের লক্ষ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে অন্তবর্তী সরকার। সুষ্ঠুভাবে ভোটের জন্য সবরকম প্রস্তুতি নিচ্ছে সে দেশের নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলিও প্রচার নিয়ে তৎপর। ফেব্রুয়ারির ভোটে জিতে কারা ক্ষমতা দখল করবে? এনিয়ে জনমতের উপর ভিত্তি করে সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ্যে আনল এক বেসরকারি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান। ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে রাউন্ড টু’-র ফল প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও আর্কাইভ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরেন সংস্থার অন্যতম কর্ণধার মহম্মদ রুবাইয়াত সরওয়ার। ৬৪টি জেলার ১০ হাজার ৪১৩ জন ভোটারকে নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, ৪০ শতাংশ ভোটারই আস্থা রাখছেন খালেদা জিয়ার দল বিএনপির উপর। তবে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগের প্রতি সমর্থন এখনও ভালোই।
সেপ্টেম্বরে সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে ভোটের ময়দানে এগিয়ে বিএনপি। ৪১.৩০ শতাংশ জনতা বিএনপিকে ভোট দিয়ে সরকারে আনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। সমীক্ষক সংস্থা সূত্রে খবর, মার্চে এই হার ছিল একটু বেশি, ৪১.৭০ শতাংশ। জামাত-ই-ইসলামির ক্ষেত্রে এই হার মার্চে ছিল ৩১.৬০ শতাংশ। সেখান থেকে এবার আরও কমে তা দাঁড়ায় ৩০.৩০ শতাংশে। আর ছাত্রদল এনসিপির ক্ষেত্রে জনসমর্থন ৫.১০ শতাংশ থেকে কমে ৪.১০ শতাংশ হয়েছে। জনতার কাছে সমীক্ষক সংস্থার প্রশ্ন ছিল, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামি লিগ ভোটে অংশগ্রহণ করতে না পারলে তাদের প্রতি সমর্থন কোন দলে যাবে। ৪৫.৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, সেই ভোট বিএনপি পাবে। তবে ৪৫.৭৯ শতাংশ মানুষের মত, আওয়ামি লিগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত। আবার ৪৫.৫৮ শতাংশের বক্তব্য, তার আগে বিচার হওয়া দরকার।
সেপ্টেম্বরের সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ভোটার ভারত ও পাকিস্তান দু’দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক চান। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার মধ্যে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার মত তুলনামূলকভাবে কম। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৮ শতাংশ পাকিস্তানের সঙ্গে দূরত্ব চান। তবে তার চেয়েও বেশি পড়ুয়া চান ভারতের সঙ্গে দূরত্ব, প্রায় ১৫.১০ শতাংশ।
সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতা জিএম কাদের মনে করেন, আওয়ামি লিগ-সহ সব দল অংশ নিলে গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে আগামী নির্বাচনের। তিনি বলেন, ”জামাতকে যখন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তখনও আমরা বাধা দিয়েছি। এগুলো দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনেনি। সবাইকে নিয়ে নির্বাচন না করলে নির্বাচন ভালো হবে না।” তাঁর আরও প্রশ্ন, ”আওয়ামি লিগের যারা ভোটার তাদের কি নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে? ভোটার তালিকায় কি তাদের নাম থাকবে না? তারা কি ভোট দেবেন না? এমন কি কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়েছে? তাহলে তারা যদি আমার পার্টিকে ভোট দেন তবে আশঙ্কা কেন?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.