ছবি: প্রতীকী
সুকুমার সরকার, ঢাকা: কুর্মিটোলায় এক ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (DU) ক্যাম্পাস। সোমবার সকাল থেকেই সেখানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শাসকদল সমর্থিত ছাত্রলিগ, বিএনপি সমর্থিত ছাত্রদল ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রমাণ সংগ্রহ করছে র্যাব ও ডিবি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ঝোপের মধ্যে পড়ে ছিল ওই ছাত্রীটির বই, ঘড়ি ও ইনহেলার। সোমবার সকালে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে যাওয়ার পথে একটি ঝোপের মধ্যে থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে আজ বেলা সাড়ে ১১টার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলিগ। সেখানে কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসু থেকে ছাত্রলিগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করছেন। যার মধ্যে রয়েছে ‘স্বাধীন দেশে আর কত? ‘বিচার চাইব একসাথে ধর্ষকের বিরুদ্ধে, ধর্ষণ করতে বর্জন ঢাবি করো গর্জন’।
অপরদিকে একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ধর্ষণ ও নির্যাতনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত এই সভায় ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেনের নেতৃত্বে ডাকসু থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এপ্রসঙ্গে আকতার হোসেন বলেন, অতীতের বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধে অভিযুক্তদের লঘু শাস্তির ফলেই বর্তমানে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধর্ষিত ছাত্রী তার বান্ধবীর বাসা ঢাকার শেওড়ায় যাওয়ার উদ্দেশে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে উঠেছিল। কিন্তু, ভুল করে শেওড়ার আগে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বাস থেকে নেমে পড়ে। আর তারপরই ধর্ষণের শিকার হন। পরে ওই ছাত্রীর মামা জানান, শেওড়া যাওয়ার সময় ভুল করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে নেমে পড়েছিল ও। তাই হাসপাতালের পাশেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।
গুলশান থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, তাঁরা ঘটনাস্থলটি খুঁজে দেখছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রীটির সঙ্গে দেখা করা হয়েছে। পরিবারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ জানানো হয়েছে রবিবার গভীর রাতে ওই ছাত্রীটি বাস থেকে কুর্মিটোলায় নামার পর অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন তার মুখ চেপে ধরে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। রাত ১০টার সময় জ্ঞান ফিরতেই সে একটি অটো ধরে বান্ধবীর বাসায় যায়। তাকে সব ঘটনা খুলে বলে। এরপরই সহপাঠীরা তাকে প্রথমে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে পরে হাসপাতালে নিয়ে যান। আর রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর একেএম গোলাম রব্বানী-সহ কয়েকজন অধ্যাপক হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.