ফাইল ছবি
নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: ইদের ছুটির পর ফের দাবি নিয়ে ঢাকার সচিবালয়ে সরকারি কর্মীরা আন্দোলন করছেন। এর মাঝেই গতকাল মঙ্গলবার রাতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। যার জেরে আহত ৭ জন। এর মধ্যে আহত দু’জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন।
সচিবালয় ও ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাংলাদেশ সচিবালয় বহুমুখী সমবায় সমিতির পুরনো ও বর্তমান এডহক কমিটির মধ্যে ক্যান্টিন পরিচালনা নিয়ে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। যা এক পর্যায়ে হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষের রূপ নেয়। নতুন এডহক কমিটির সমর্থক ও বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম (৫৮), কৃষি মন্ত্রণালায়ের প্রশাসনিক কর্মকতা ওবায়দুল রবিকে (৪৫) পুরাতন কমিটির লোকজন এলোপাথাড়িভাবে মাথায় ও শরীরে আঘাত করে বলে অভিযোগ। সহকর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢামেকে নিয়ে আসেন। এদিকে, সচিবালয় সংযুক্ত পরিষদের দাবি, নুরুল ইসলামের উপর হামলা করেছেন বাদীউল কবীর গ্রুপের কর্মীরা। হামলায় ৫-৭ জন আহত হয়।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে মাস খানেক ধরে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। শেখ হাসিনার আমলের ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর রবিবার (২৫ মে) রাতে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার। উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশটি অনুমোদনের পর থেকেই গত কয়েকদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন আধিকারিক ও কর্মচারীরা। অধ্যাদেশ জারির খবর প্রকাশ্যে আসতেই তা বাতিল করার দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সরকারি কর্মীরা। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়।
নয়া অধ্যাদেশ অনুসারে, বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীরা যদি এমন কোনও কাজ করেন, যা সরকার বা প্রশাসনের প্রতি আনুগত্যের পরিপন্থী, তা হলে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে। এছাড়া যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া ছুটি নিলে, সহকর্মীকেও ছুটি নিতে প্ররোচিত করলে কিংবা নির্দিষ্ট কাজ করতে ব্যর্থ হলেও সরকারি কর্মচারীদের চাকরি যেতে পারে। কোনও কর্মচারীর বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ উঠলে তাঁকে ৭ দিনের মধ্যে কারণ জানানোর নোটিস দেওয়া হবে। কোনও কর্মচারী দোষী সাব্যস্ত হলে কেন তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে না, তা জানাতে সাত দিন সময় দেওয়া হবে। শাস্তি পেলে সেই কর্মচারী ৩০ দিনের মধ্যে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করা যাবে না। এনিয়েই আপত্তি সরকারি কর্মচারীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.