সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন চারেক আগে বাংলাদেশে জল্পনার ঢেউ উঠেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস নাকি প্রবল চাপে পড়ে পদত্যাগ করতে চাইছেন। তারপর তড়িঘড়ি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক ডাকেন ইউনুস। আলোচনার পর তাঁর একাধিক উপদেষ্টা জানিয়ে দেন তিনি পদত্যাগ করছেন না। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি সাময়িকভাবে নির্বাচন থেকে নজর ঘোরাতেই এই জল্পনা উসকে দিয়েছিলেন ইউনুস? কিন্তু কোনও পরিস্থিতিতেই দ্রুত ভোটের দাবি থেকে সরে আসছে না বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানও এবার ভোটের দাবিতে তোপ দাগলেন অন্তর্বর্তী সরকারকে। কড়া ভাষায় তিনি জানিয়েছেন, দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। সরকার অবশ্যই জনগণের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান-অভিমান বা রাগ-বিরাগের কোনও সুযোগ নেই। ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশের জাতীয় নির্বাচন (Bangladesh Election) করতে হবে।
গত শনিবার ইউনুসের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধিরা। আলোচনায় খালেদা জিয়ার দলের সদস্যরা এবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। তারপর রবিবার ঢাকায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন তারেক রহমান। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর সেখানেই তিনি বলেন, “এই সরকারের নেতৃত্বে জনগণ অবিলম্বে অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায়।” সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়ে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে। দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। সরকার অবশ্যই জনগণের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান-অভিমান বা রাগ-বিরাগের কোনও সুযোগ নেই।”
দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, “এক অনিশ্চিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। যে কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি, এই মুহূর্তে তাঁদের দাবি শোনার কেউ নেই।” কয়েকদিন আগেই ইউনুসকে বলতে শোনা গিয়েছিল ছোট সংস্কার, বড় সংস্কার। এনিয়ে তারেক ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, “সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। অল্প কিংবা বেশি সংস্কার বলে কিছু হয় না। রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।” তিনি আরও বলেন, “নৈতিক কারণে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের কাছে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। জনগণকে অন্ধকারে রেখে বা রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনও পরিকল্পনা কার্যকর বা টেকসই হয় না, হবেও না।”
সম্প্রতি লন্ডনে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সর্বক্ষণ মায়ের পাশে ছিলেন তারেক। তারপর থেকেই তাঁর বাংলাদেশে ফেরার সম্ভাবনা জোরাল হয়েছে। বিএনপির নেতারাও বলছেন তারেক খুব শ্রীঘ্রই দেশে ফিরছেন। আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর ফাঁকা মাঠে গোল দিতে প্রস্তুত বিএনপি। কিন্তু তাদের চ্যালেঞ্জ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। এর মাঝেই জল্পনা তৈরি হচ্ছে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঢাকায় আসা নিয়ে। ফলে বিএনপি আর অপেক্ষা করতে রাজি নয়। দ্রুত নির্বাচনের সঠিক দিন না জানালে বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.