নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। এদিকে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা সমন্বয়-সহ ৫টি কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ”ড. ইউনুসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তার নির্বাচনী প্রস্তুতি সংক্রান্ত নির্দেশের জন্য। এটি অত্যন্ত ইতিবাচক একটি উদ্যোগ। আমরা চাই, আগামীর নির্বাচন যেন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সর্বজনগ্রাহ্য হয়।” নির্বাচন কমিশন দ্রুত সব কাজ শেষ করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবে বলে আশা ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ”দেশের জনগণ নির্বাচন ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে। আশা করছি নির্বাচন কমিশন এই কাজ (নির্বাচনের প্রস্তুতি) খুব দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে একটা নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবেন, যেন এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। তাহলে নির্বাচন নিয়ে আর কোনও সমস্যা হবে না।” মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ”ঐকমত্য কমিশনে প্রত্যেকটি বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ বিষয়ের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়েছে। কতগুলো মৌলিক বিষয়ে বিএনপি একমত হতে পারেনি। ভবিষ্যতে সংসদে বিতর্কের মাধ্যমে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।”
বিএনপি সংস্কারে বাধা দিচ্ছে, এমন খবর সংবাদমাধ্যমে দেখা গিয়েছে। এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে তাঁর দল তিন দিন আগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তাঁদের জন্ম সংস্কারের জন্য। আজ যদি বলা হয়, বিএনপি সংস্কার আটকে দিচ্ছে, তাহলে তা অন্যায়ভাবে বলা হবে।
সীমান্ত হত্যা নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ”সীমান্ত হত্যা হালকা করে দেখার বিষয় নয়। এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।” তিনি বলেন, ”এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার। আমরা উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। সেই নির্বাচিত সরকারই একমাত্র দেশ চালাবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করবে।”
এদিকে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পাঁচটি সমন্বয় ও তদারকি কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব মহম্মদ শাহ আলম স্বাক্ষরিত পাঁচটি অফিস আদেশে এসব কমিটি করার তথ্য জানানো হয়েছে। অফিস আদেশ অনুযায়ী, চারজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে এই কমিটিগুলো আইনশৃঙ্খলা, মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণ আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ, নির্বাচনী আইন, বিধি, প্রবিধি ও নীতিমালা এবং নির্বাচনী তদারকি (ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি) কমিটি, প্রবাসী ভোট ও দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক বিষয়গুলো কাজ করবে। প্রতিটি কমিটিতে একজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে সাতজন করে সদস্য রাখা হয়েছে।
অফিস আদেশের তথ্যমতে, আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব) আবুল ফজল মহম্মদ সানাউল্লাহ। তিনি একই সঙ্গে প্রবাসী ভোট এবং দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সমন্বয় কমিটির সভাপতির দায়িত্বও পালন করবেন। ভোটগ্রহণ আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ কমিটির নেতৃত্ব দেবেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ। নির্বাচনী আইন, বিধি, প্রবিধি ও নীতিমালা এবং নির্বাচনী তদারকি (ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি) কমিটির নেতৃত্ব দেবেন নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ। আর মাঠ প্রশাসন সমন্বয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন কমিশনার মহম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.