শ্রীরামপুর স্টেশন থেকে ১০৪টি অবৈধ নির্মাণ ভেঙে শতাধিক হকার হটাল রেল। নিজস্ব চিত্র
সুব্রত বিশ্বাস: হাই কোর্টের নির্দেশই ছিল হাতিয়ার। তার উপর নির্ভর করে শ্রীরামপুর স্টেশন থেকে ১০৪টি অবৈধ নির্মাণ ভেঙে শতাধিক হকার হটাল রেল। রাতভর উচ্ছেদে অভিযানে রুটিরুজি হারালেন শতাধিক হকার।
শনিবার সারাদিনই স্টেশন চত্বর ছিল সরগরম। রাত বারোটার পর স্টেশন চত্বর থেকে হকারদের সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। প্রতিবাদে দিনভর স্টেশন সরগরম থাকলেও রাত বাড়তে দেখা যায় অন্য চিত্র। তুমুল ঝড়বৃষ্টির মধ্যে শয়ে শয়ে আরপিএফ এসে নামে স্টেশনটিতে। এরপরই পিছু হটতে থাকেন প্রতিবাদীরা। উপায় নেই বুঝে হকাররা দোকান থেকে মালপত্তর বের করে নিয়ে যান। গভীর রাতে শতাধিক রেলকর্মী দোকান ভাঙার কাজ শুরু করে। চল্লিশ-পঞ্চাশ বছরের আয়ের ভরসাকে এভাবে হারাতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন হকার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। স্টেশনে দীর্ঘদিনের চা বিক্রেতা খোকন দাস জানান, “এই বয়সে রুটিরুজি হারিয়ে বাঁচার পথ দেখছি না।” মাছ বিক্রেতা পার্থ দে একই সুরে বলেন, “পরিবার নিয়ে এখন কোথায় দাঁড়াব বুঝতে পারছি না।”
উচ্ছেদের প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকেই মিটিং মিছিল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন। আন্দোলনের পুরোভাগে থাকা তৃণমূলের জেলার সহ সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আলোচনা করে পুনর্বাসন দিয়ে ভাঙলে এতগুলি পরিবার পথে বসত না। বহু বছর ধরে ওই স্টেশনের উপরে, নিচে ও লাইন ঘেঁষে অসংখ্য দোকানপাট গজিয়ে উঠেছিল। এখন স্টেশন উন্নয়নের কাজ চলছে তাই হকার সরানোটা জরুরি হয়ে পড়েছে। নোটিস দেওয়ার পর হকাররা হয় কোর্টে আপিল করেন। রায় যায় বিপক্ষে।” অন্বয় দাবি করেছিলেন, পঞ্চাশ বছরের বেশি ধরে স্টেশন ও চত্বরে চায়ের দোকান, মাছের দোকান ও অন্যান্য সামগ্রী বেঁচে জীবিকা চালান হকাররা। তাদের স্টেশনের পাশেই রেলের জায়াগায় পুনর্বাসন দিয়ে সরানো হোক। যদিও তা কাজে লাগেনি। রাতেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় শতাধিক দোকান ও নির্মাণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.