অরিজিত গুপ্ত, হাওড়া: অষ্টমীর রাতে হাওড়ায় গুলি করে খুনের ঘটনায় নয়া মোড়। সিসিটিভি খতিয়ে দেখে দু’জনকে আটক করল পুলিশ। যদিও এখনও খোঁজ মেলেনি মূল অভিযুক্ত শুটারের। তাঁর খোঁজে আজ বুধবার দিনভর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত সুরেশ যাদব বিহারের কুখ্যাত একজন বালি মাফিয়া। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জে। এর আগেও সে রাজ্যে তাঁর উপর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। কিন্তু সে বার কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে যান সুরেশ। কিন্তু এবার একেবারে পরিকল্পনা করে গুলি করে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
কিন্তু কেন এই খুন? পুলিশ জানিয়েছে, ”সুরেশ বিহারের একজন বালি মাফিয়া। কুখ্যাত দুষ্কৃতী। একাধিক অপরাধ মামলায় বিহারের গোপালগঞ্জে ৭ থেকে ৮ বছর জেল খেটেছে। ২ বছর আগে বিহারের অপর এক দুষ্কৃতীদল সুরেশের বাড়িতে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু সে যাত্রায় সে বেঁচে যায়।” অন্যদিকে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিহারেরই কোনও দুষ্কৃতী দল সুরেশকে খুন করার জন্য হাওড়ায় এসে গুলি চালায়।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, যে ২ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে তারা এই খুনের টিপার। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শ্যুটারের খোঁজে বুধবার দিনভর তল্লাশি চালায় পুলিশ। ওই আধিকারিকের কথায়, বিহারের দুষ্কৃতীরাই হাওড়ায় এসে এই খুন করেছে। বলে রাখা প্রয়োজন, মঙ্গলবার অষ্টমীর রাত। উৎসবের রাত। ফলে মানুষের ভিড়। সেই সময়বন বিহারী বোস লেনে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দুই দুষ্কৃতী বাইকে চেপে এসে বছর ৫৫-র সুরেশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাঁর বুকে গুলি লাগে। আচমকা এই ঘটনা চোখের সামনে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় মানুষজন। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ব্যক্তি বেশ কিছুক্ষণ রাস্তায় পড়ে ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হাওড়া থানার পুলিশ ও হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তা -সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। ওই ব্যক্তিকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে বুধবার হাওড়া থানায় বসে সুরেশের জ্যাঠতুতো দাদা বীরেন্দ্র যাদব জানালেন, ‘‘সুরেশের উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের ঘোষবাগানে ফ্ল্যাট রয়েছে। ২ দিন আগে হাওড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে স্ত্রী রমাবতীকে নিয়ে আসে সুরেশ। সুরেশের স্ত্রী রমাবতী বিহারের গোপালগঞ্জের একটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান।’’ কিন্তু কেন সুরেশকে খুন করা হয়েছে তা বুঝতে পারছে না সুরেশের পরিবার। এই প্রসঙ্গে বীরেন্দ্র আরও জানান, ”গরিবের মসিহা ছিল আমার ভাই। কেন ওকে এভাবে খুন হতে হল তা বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে বিহারের কেউই আমার ভাইকে এখানে ফলো করে এসে খুন করেছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.