অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: জগাছায় বাবা, মা ও ছেলের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বেশ কিছু তথ্য সামনে উঠে আসছে। অনলাইন ব্যবসায় প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন ছেলে সম্বৃত খাঁ। পুরো টাকাই লোকসান হয় বলে খবর। ফলে পরিবারের সঞ্চয়ের সমস্ত টাকাই শেষ হয়ে গিয়েছিল। ওই পরিবার কার্যত নিঃস্ব হয়ে যায়। তার জেরেই কি ওই পরিবার আত্মহত্যার পথ বেছে নিল? সেই প্রশ্নও উঠেছে।
এছাড়াও আরও একটি বিষয় জগাছা পুলিশের কাছে এসেছে। বরাবর সম্বৃত মেধাবী ছিলেন। পড়াশোনাতেও যথেষ্ট ভালো ফল করতেন। কিন্তু তেমনভাবে কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পাননি। সেজন্য নিজেকে অন্যদের থেকে একসময় আলাদা করেও ফেলেছিলেন তিনি! অবসাদেও তিনি ভুগতেন বলে খবর। আর্থিক অনটন, অন্যদিকে মানসিক অবসাদ, তার জেরেই কি এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিল এই পরিবার? বিষ খেয়ে তিনজনেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গিয়েছে, জগাছার রামরাজাতলার হাটপুকুর লেনের শিবালয় আবাসনে বাস খাঁ পরিবারের। চারতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন গৃহকর্তা বলরাম খাঁ (৬৫), তাঁর স্ত্রী শেলি খাঁ (৫৭) এবং একমাত্র সন্তান সম্বৃত। বলরাম খাঁ এলআইসিতে কর্মরত ছিলেন। শেলি খাঁ পোস্ট অফিসের কর্মী। ছেলে সম্বৃত একটি আইটি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। গতকাল, মঙ্গলবার বেলায় ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল তিনজনের দেহ। তখনই পুলিশ অনুমান করেছিলেন, বাবা-মা-ছেলে তিনজনেই বিষ খেয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রথমে ছেলে সম্বৃতই বিষ খান! নিজের একমাত্র ছেলে বিষ খেয়েছে দেখে বাব-মা আর নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি। সম্বৃতের বাবা বলরাম খাঁ ও মা শেলি খাঁও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন! বুধবার তদন্তের জন্য পুলিশ আধিকারিক ও ফরেন্সিক দলের সদস্যরা ফের জগাছার শিবালয় আবাসনের চারতলার ফ্ল্যাটে যান। ফ্ল্যাটের ঘরের নানা নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি ওই পরিবারের আত্মীয়স্বজন ও সম্বৃতের বন্ধুদের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারীরা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, জগাছা এলাকাতেই বলরামবাবুদের একটি পৈতৃক বাড়ি ছিল। সেই পৈতৃক বাড়ি বিক্রি করে শিবালয় আবাসনের ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন তাঁরা। পৈতৃক বাড়ি বিক্রি করে পাওয়া টাকা পরিবারটি পোস্ট অফিসে জমা রেখেছিল। কিন্তু সেই সমস্ত সঞ্চিত টাকা ছেলে সম্বৃত অনলাইন ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন। ব্যবসায় লোকসান হয়ে গিয়ে কার্যত ওই পরিবার নি:স্ব হয়ে যায়। বাজারে প্রচুর ধারদেনাও হয়ে যায় পরিবারটির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.