Advertisement
Advertisement
করোনা

করোনা ‘যুদ্ধে’ জয়ী কালিম্পংয়ের মৃতার পরিবারের সদস্যরা, সুস্থ হয়ে ফিরলেন বাড়িতে

আপাতত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে তাঁদের।

7 coronavirus-positive patients in the state have now been tested negative and cured.
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:April 13, 2020 9:38 am
  • Updated:April 13, 2020 10:03 am   

শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: করোনাকে পরাজিত করে ঘরে ফিরলেন কালিম্পংয়ের মৃত মহিলার পরিবারের আরও চার সদস্য। রবিবার রাতে পুলিশি নিরাপত্তায় ওই চারজন বাড়িতে ফেরেন। করোনাকে পরাস্ত করতে পেরে খুশি ওই চার জনই। এদিন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রত্যেক কর্মী এবং আধিকারিককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

এদিন দ্বিতীয় দফায় মৃতার স্বামী, শাশুড়ি, দেওর ও তাঁদের বাড়ির পরিচারিকা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। চার জনের মধ্যে মৃতার স্বামী, শাশুড়ি এবং পরিচারিকা কালিম্পংয়ে ফিরে যাবেন। দেওর শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগরের বাসিন্দা হলেও তাঁকেও কালিম্পংয়ে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, এদিনও প্রধাননগরের নার্সিংহোমটিতে করোনা হাসপাতাল চালু করা সম্ভব হয়নি। রবিবারও নার্সিংহোমের জটিলতা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জোর করে করোনা হাসপাতাল তৈরি করতে গেলে ফের বিক্ষোভ হতে পারে। সেজন্য প্রধাননগরের পরিবর্তে শিলিগুড়ি সংলগ্ন কাওয়াখালির নার্সিংহোম অধিগ্রহণ করে করোনা হাসপাতাল করার বিকল্প চিন্তা শুরু করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয় কালিম্পংয়ের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের উডেন রোডের বাসিন্দা ওই মহিলা। পরে একে একে পরিবারের আরও দশ জন তাঁর সংস্পর্শে আসায় সংক্রমিত হয়। ১ এপ্রিল থেকে ওই দশ জনকে করোনা হাসপাতাল করতে অধিগৃহিত শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে রাখা হয়। শনিবার করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মৃতার শ্বশুর, দেওরের স্ত্রী ও তার তিন বছরের শিশু। এরপর শনিবার রাতে বাকি চার জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। নিশ্চিত হতে রবিবার সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ‘ভাইরাস রিসার্চ এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিতে’ ফের সোয়াব টেস্ট করা হলে এই বারও রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপরই ওই চার জনকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য দপ্তর।

siliguri-2

গত চব্বিশ ঘন্টায় সাত জন করোনা সংক্রমিত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠায় বেশ স্বস্তিতে উত্তরের চিকিৎসকমহল। তবে ওই পরিবারের আরও তিন জন সদস্য-সহ মোট চার জন এখনও নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। রবিবার দুপুরেই করোনায় সংক্রমিত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নার্সকে ওই নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। রাজ্যের করোনা মোকাবিলার বিশেষ টাস্ক ফোর্সের সদস্য গোপালকৃষ্ণ ঢালি বলেন, “এই ক’দিনে চিকিৎসায় খুব ভাল সাড়া দিয়েছে প্রত্যেকে। মোট সাত জন ওই পরিবারের সদস্য সুস্থ হয়েছেন।
বাকিরাও খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।” তিনি জানান, আগেও তাঁ বলেছিলেন করোনা হলে আতঙ্কের কিছু নেই। চিকিৎসক এ কে দাস বলেন, “সুস্থ হয়ে উঠলেও প্রত্যেককে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। না হলে নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।” সুস্থ হয়ে উঠে এদিন পরিবারের সদস্য বিজয় সিং বলেন, “আমরা পরিবারের এক সদস্যকে হারিয়েছি। সেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু বাকি পরিবার সেড়ে উঠছি সেটা ভাল লাগছে। আমরা পুনর্জন্ম পেলাম। চিকিৎসকদের পরামর্শ, সামাজিক দুরত্ব, লক ডাউন
অবশ্যই মানা উচিত।”

[আরও পড়ুন: একঘেয়েমি কাটানোর ‘অস্ত্র’ সুর, কোয়ারেন্টাইনে গানেই মজে ভিনরাজ্যের শ্রমিকরা]

এদিকে এদিন ফালাকাটা থেকে মুর্শিদাবাদে বাড়ি ফেরার পথে শিলিগুড়িতে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন ১২ জন শ্রমিক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শ্রমিকরা ফালাকাটার একটি কোল্ড স্টোরেজে কাজ করতেন। এদিন একটি ট্রাকে লুকিয়ে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু শিলিগুড়ি বর্ধমান রোডে ওই ট্রাকটি একটি পেট্রোল পাম্পে দাঁড়ালে, কিছু শ্রমিক ট্রাক থেকে নেমে পড়ে। সেই সময় পেট্রলপাম্পের কর্মীদের নজরে চলে আসে তাঁরা। এরপরে পাম্পের কর্মীরা শ্রমিকদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে খালপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদেরকে আটক করে এবং শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। এরপর স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে তাদের শিলিগুড়ি সংলগ্ন চম্পাসারি শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরে কোয়ারান্টাইন রাখা হয়।

[আরও পড়ুন: ফেরাল একাধিক হাসপাতাল, শ্বাসকষ্টে ভুগে মুম্বইয়ে মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ