হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে জখম পরিযায়ী শ্রমিককে। নিজস্ব চিত্র
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: ফের বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলার ৮ পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশি অভিযোগে ওড়িশার ভুবনেশ্বরে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে শ্রমিকদের বাংলায় ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় বলেও পুলিশের দিকে অভিযোগ উঠেছে। পরে সাত শ্রমিককে ভুবনেশ্বর এইমস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তাঁরা এখন চিকিৎসাধীন বলে খবর। ভুবনেশ্বর থেকে এক শ্রমিক জখম অবস্থায় মুর্শিদাবাদে ফিরে এসেছেন। তিনিও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর বেশ কয়েকমাস ধরে ‘অত্যাচারের’ অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। ওড়িশাতেও বাংলার শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল অতীতে। ফের ওড়িশার ভুবনেশ্বরে বাংলার শ্রমিকদের উপর নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগ উঠল। সূত্রের খবর, সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানা এলাকার তিনজন, লালগোলা থানা এলাকার তিনজন এবং ভগবানগোলা থানা এলাকার দু’জন পরিযায়ী শ্রমিক ভুবনেশ্বরের মহাবীরনগরের একটি জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন। গত ২৪ আগস্ট কাজ শেষে রাতে ওই পরিযায়ী শ্রমিকেরা ঘুমিয়েছিলেন। সেই সময় একদল বাসিন্দা সেখানে গিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত নির্যাতন চলে!
পরে পুলিশ সেখানে পৌঁছয়। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা পুলিশ নেয়নি বলে অভিযোগ। উলটে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওড়িশা থেকে চলে যেতে চাপ দেওয়া হয়! যদিও পরে ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে সাত পরিযায়ী শ্রমিককে ভর্তি করানো হয়। আবদুল আলিম নামে গুরুতর জখম অবস্থায় এক পরিযায়ী শ্রমিক পড়শি রাজ্য থেকে মুর্শিদাবাদে ফিরে এসেছেন। তিনি এখন লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বলেন, “বাংলাদেশি সন্দেহে অকথ্য নির্যাতন শুরু হয়। বাঁশ-লাঠি, লোহার রড দিয়ে প্রচণ্ড মারতে থাকে। আমার মোবাইল ফোন, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড-সহ প্রায় চার হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে।”
ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম বলেন, “গোটা ঘটনার খবর আমি পেয়েছি। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের পরিবর্তন না হলে এই অত্যাচার থামবে কিনা জানি না। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে যাবেনই। কিন্তু কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদেরকে কোনও নিরাপত্তা দিতে পারছেন না। এটা অত্যন্ত লজ্জার। আমরা তাঁর ইস্তফা দাবি করছি।” ভগবানগোলা তৃণমূল বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার বলেন, “এসআইআর-সহ অন্য ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলাকে ভয় পাচ্ছে। তাই এখন যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করে দেওয়াই লক্ষ্য।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.