জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: আবারও দুষ্কৃতীদের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হলেন আদিবাসী এক গৃহবধূ। অভিযোগ, রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মেছো ভেড়িতে গণধর্ষণ করা হয় তাঁকে। অত্যাচারের পর অর্ধনগ্ন অবস্থায় হাত, মুখ বেঁধে মেছো ভেড়ির পাশে ফেলে রেখে যাওয়া হয় তাঁকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। নৃশংস এই ঘটনার সাক্ষী উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানার এক নম্বর গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুন্সিঘেরির ছয়ানি বাজার সংলগ্ন এলাকা। গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারির দাবিতে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয়রা।
অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে এই ছয়ানি বাজারে রাজনৈতিক সংঘর্ষ লেগেই ছিল। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার গভীর রাতে বাজারে বোমাবাজি করে একদল দুষ্কৃতী। বোমাবাজির পর এলাকার বেশ কিছু মানুষ ভয় পেয়ে অন্যত্র পালিয়ে যান। নিখোঁজ হয়ে যান ওই নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামীও। ওই গৃহবধূ তাঁর স্বামীকে খুঁজতে বাইরে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সুযোগে মন্টু কাহার, জগবন্ধু দাস ওরফে কেলো, শুকদেব দাস-সহ বেশ কয়েকজন গৃহবধূকে মেছো ভেড়িতে তুলে নিয়ে যায়। আলা ঘরের মধ্যে হাত ও মুখ বেঁধে তারা গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে বলেও অভিযোগ। ওই আলা ঘরের পাশে বাঁধের উপর নির্যাতিতাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
সকালবেলায় স্থানীয়রা হাত-মুখ বাঁধা, অর্ধনগ্ন অবস্থায় ওই গৃহবধূকে দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা খবর দেন হাড়োয়া থানায়। হাড়োয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাড়োয়া হাসপাতালে ভরতি করে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে সংকটজনক। এরপর ঘটনার তদন্ত করতে এলাকায় যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। স্থানীয় মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, বুধবার রাতে অশান্তির সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। তাঁদের আরও অভিযোগ, পুলিশের সামনে ওই গৃহবধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতীরা। তবে পুলিশ ঘুষ খেয়ে এই ঘটনা বর্তমানে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ। এরপর পথ অবরোধও করেন স্থানীয়রা। যদিও পুলিশ স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের দাবি, ওই মহিলার স্বামী বিরোধী দলের সমর্থক হওয়ার কারণেই তাঁর উপর এই অত্যাচার হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে শাসক দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাজ্য তথা কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, গোটা ঘটনাটি সাজানো। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। তবে ওই মহিলার বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.