Advertisement
Advertisement
Alipurduar

জেলা হাসপাতালে অসাধ্যসাধন, হিপ জয়েন্ট ভাঙা কিশোরী হেঁটে বাড়ি ফিরল ১০ দিনেই

এমন অস্ত্রোপচার এই প্রথম হল জেলা হাসপাতালে।

Alipurduar District Hospital did impossible task, girl with broken hip returns home on foot in 10 days

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:September 27, 2025 1:54 pm
  • Updated:September 27, 2025 1:54 pm   

রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ১৮ বছরের কিশোরী পেলভিস বোন ভেঙে হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরাও পরিস্থিতি দেখে হতবাক হন। কারণ , তাকে সুস্থ করতে হলে জটিল অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু জেলা হাসপাতালে সেই অস্ত্রোপচারের তেমন কোনও পরিকাঠামো ছিল না। মরিয়া চিকিৎসকরা সব প্রস্তুতি নিয়ে ওই ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করলেন। ১০ দিনেই নিজে পায়ে হেঁটে ওই কিশোরী বাড়ি ফিরল। এমনই অসাধ্যসাধন করল আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতাল।

Advertisement

এরিনা বাগোয়ার নামে ওই কিশোরীর বাড়ি আলিপুরদুয়ারের নাংডালা চা বাগান এলাকায়। বাড়িতে অসাবধানতাবশত চেয়ার থেকে পড়ে গিয়েছিল ওই কিশোরী। যন্ত্রণায় কাতর হয়ে ছটফট করতে থাকে সে। ওঠার ক্ষমতাও ছিল না। এরিনাকে কোনওরকমে পরিবারের লোকজন আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। দেখা যায় কিশোরী ওই মুহূর্তে হাঁটাচলার ক্ষমতাও হারিয়েছে। দ্রুত পরীক্ষা করে দেখা যায় ওই কিশোরীর হিপ জয়েন্ট ভেঙে গিয়েছে। দ্রুত তার অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন।

কিন্তু কীভাবে হবে এই জটিল অস্ত্রোপচার? জেলা হাসপাতালের সেই অস্ত্রোপচারের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। সাধারণত জেলা সদর হাসপাতালে এই ধরনের অপারেশন হয় না। একমাত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে এই অস্ত্রোপচার সম্ভব বলে দাবি করেছে জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শল্য চিকিৎসক শুভেন্দু সিকদারের বিশেষ চেষ্টায় ওই হাসপাতালেই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রস্তুতি নেওয়া হয় হাসপাতালে। এরপর ওই কিশোরীর অস্ত্রোপচার করা হয়। মিলল সাফল্য।

সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওই কিশোরী নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। অস্ত্রোপচারের ১০ দিন পর হাঁটতে শুরু করে সে। গতকাল, শুক্রবার চতুর্থীর দিনে নিজের বাড়ি ফিরে গিয়েছে সে। জেলা সদর হাসপাতালের সুপার ডাঃ পরিতোষ মণ্ডল বলেন, “আসলে এক্সরে করার পরে চিকিৎসকরা দেখতে পান যে মেয়েটির দুই হিপ জয়েন্টে ভাঙন। চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে হিপ জয়েন্ট ভেঙে গিয়েছে। এই অপারেশনের জন্য বিশেষ কিছু সামগ্রী লাগে। শল্য চিকিৎসক শুভেন্দু সেগুলোর কথা বললে বাইরে থেকে কিনে দেওয়ায় সম্মত হই। আর তারপরেই এই জটিল অস্ত্রোপচার সম্ভব হয়েছে। এক মাস পরে মেয়েটির হাঁটাচলা করার কথা। কিন্তু সাত-দশদিনেই দিব্বি হাঁটতে শুরু করেছে। অস্ত্রোপচার অত্যন্ত সফল হয়েছে। আমরা খুবই খুশি।”

এরিনা বাগোয়ার বলেন, “এবার দুর্গাপুজো দেখতে পাব কিনা তাই নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু জেলা সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা আমাকে সুস্থ করে তুলেছেন। আমি খুব খুশি। পায়ে হেঁটে ঠাকুর দেখতে যাব।” রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “এই অস্ত্রোপচার জেলা সদর হাসপাতালে প্রথম হল। হাসপাতাল সুপার ও শল্য চিকিৎসকের তৎপরতায় এই অস্ত্রোপচার এখানে করা সম্ভব হয়েছে।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ