সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এবার চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (TMC) নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই অতনু রায় নামে দলেরই এক কর্মী বর্ধমান আদালতে এ বিষয়ে মামলা করেছেন। আদালতের তরফে বর্ধমান থানার পুলিশকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতনুর অভিযোগ, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত তাঁকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিনিময়ে ৭ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। উত্তমবাবুর স্ত্রী তথা জেলা মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী শিখা দত্ত সেনগুপ্ত এবং অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আর এক তৃণমূল কর্মী ঘটনায় জড়িত। যদিও উত্তমবাবু ও শিখাদেবী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, বিজেপির চক্রান্ত রয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের এবং তৃণমূলের বদনাম করতে গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা।
অতনুবাবুর আইনজীবী রবিবার বলেন, “আমার মক্কেলের কাছে তাঁর অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। বর্ধমান থানার আইসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।” অতনুবাবু দাবি করেন, ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষকের চাকরি করে দেবে বলে তাঁর কাছে ৭ লক্ষ টাকা নেন তৃণমূল নেতা। চাকরি করে দিতে না পেরে তাঁকে একটি সরকারি দপ্তরের জাল নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। পরে সেটি জাল জানতে পেরে অতনু উত্তমবাবুর কাছে যান। তখন সেটি ফেরত নিয়ে তাঁকে ৩ লক্ষ টাকার চেক দেন উত্তমবাবু ও শিখাদেবী। সেটি ব্যাংকে জমা দিলে বাউন্স করে। তারপর বারবার টাকা ফেরত চেয়েও না পেয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
উত্তমবাবু বলেন, “যে চেকের কথা বলা হচ্ছে সেটি তাঁরা দেননি। একসময় ঘনিষ্ঠতার সুযোগে সেটি হাতিয়ে নেওয়া হয়ে থাকতে পারে। আর জাল নিয়োগপত্রের যে অভিযোগ করছে সেটি দেখাতে পারছে না। বিজেপির চক্রান্তে উনি এমন মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আদালতে আমরা প্রমাণ করে দেব মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।” শিখাদেবী বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। ভোটের আগে দলকে বদনাম করতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমন কোনও ঘটনার কথা জানা নেই। কেউ মিথ্যা করে অভিযোগ করতেই পারে। তাই বলে সেটা সত্যি হয়ে যায় না।”
এবিষয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “এসব বিজেপির চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়। উত্তমবাবু ১৯৯৮ সাল থেকে দলের একনিষ্ঠ সৈনিক। গরীব মানুষের পাশে থেকে কাজ করেন। তাঁর গায়ে কালির দাগ লাগাতে এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা দেখেছি শুভেন্দু অধিকারী একাধিক দপ্তরের মন্ত্রী হয়েও বিজেপির হয়ে কাজ করতেন। পরে বিজেপিতে যোগ দেয়। এক্ষেত্রেও উত্তমবাবুর ঘনিষ্ঠ হয়ে তাঁকে বিজেপির কথায় ফাঁসানো হয়েছে।” বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক শ্যামল রায় বলেন, “তৃণমূলের নেতারা এটাই করছে। টাকা নিয়ে চাকরি দেয় না। সামনের নির্বাচনে তৃণমূলের বিদায় হচ্ছেই। তাই প্রতারিতরা অভিযোগ জানানোর সাহস পেয়েছেন। তৃণমূল বিজেপির নাম মিথ্যা করে এর মধ্যে জড়াতে চাইছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.