আমেরিকান ইল। পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের চাঁদরাডি গ্রামে। ছবি: সুমিত বিশ্বাস।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তখন ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ১টা ৪৬। মুষলধারে বৃষ্টি না পড়লেও অনর্গল ভিজে যাচ্ছে শরীর। লক্ষ্মীবারে পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের টামনা থানা এলাকার তারা ড্যাম থেকে উপচে পড়া জল যে পথ দিয়ে জোড়ে মিশছে, সেই ২০ ফুট উঁচু জায়গায় রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে জাল নিয়ে দাঁড়িয়ে মৎস্যপ্রেমীরা। সেই ছবি ক্যামেরাবন্দি করছেন পুরুলিয়ার আলোকচিত্রীরা। ফি বর্ষায় তারা ড্যামের এমন ছবি সামনে আসে। কিন্তু এদিন সকলের নজর কেড়ে নিল এক অদ্ভুত আকৃতির মাছ! পুরুলিয়া মৎস্য দপ্তর জানিয়েছে এটা আমেরিকান ইল।
টামনা থানার চাঁদরাডি গ্রামের বিকাশ গোপের জালে ধরা পড়েছে মাছটি। অমনি চারদিকে হইচই শুরু হয়ে যায়। কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায় মাছ ধরাও। এরপর সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ওই মাছের ছবি। পরে যখন জানা গেল পরিচয়, প্রশ্ন উঠতে শুরু করল কীভাবে এখানে এল এই মাছ! উত্তর আমেরিকার বাসিন্দা ইল মূলত নদী ও সমুদ্রে থাকে। নোনা জলেই এদের জন্ম। যদিও জীবনযাপন করে মিষ্টি জলে।
পুরুলিয়া মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইল সমুদ্রে ডিম পাড়ে। সেই ডিম থেকে বের হওয়া লার্ভা স্রোতের মাধ্যমে নদীর দিকে চলে আসে। এই মাছ একেবারে সর্বভুক। বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়, ছোট মাছ, ঝিনুক এবং অন্যান্য জলজ প্রাণী খায়। মৎস্য দপ্তর জানিয়েছে, এই মাছের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। প্রায় বিশ্ব জুড়ে এর সংরক্ষণের চেষ্টা চলছে। এই মাছটি আসলে নিশাচর। রাতেই শিকার করে তারা খায়। তবে ঘ্রাণশক্তি ভীষণই প্রবল। খাবার খুঁজে পেতে মূলত ঘ্রাণের উপর নির্ভর করে থাকে। দপ্তরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা পিয়াল সর্দার বলছেন, “আমরা ছবি দেখে নিশ্চিত এই মাছটি আমেরিকান ইল। কিন্তু কীভাবে এটা এখানে এল? ভীষণ আশ্চর্য লাগছে। এখানে তো কোনওভাবেই আসার কথা নয়। এই মাছ মূলত নদী এবং সমুদ্রে পাওয়া যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.