বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ফের ভূমিধস ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। একমুখী যান চলাচল জারি রয়েছে। তবে তীব্র যানজটে নাকাল পর্যটকরা। চারদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার চালু হতে তারখোলায় ভূমিধস নামে। পাহাড় ধসে বোল্ডার, মাটি গড়িয়ে নামায় জাতীয় সড়কের উভয় লেন বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার সকালে ধস সরিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলেও ২৯ মাইল গেইলখোলায় একমুখী করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে যানজট এড়াতে বিকল্প রুটে চলাচল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারখোলায় ভূমিধস নামে। তার আগে ১৩ অক্টোবর দুপুর থেকে ১৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চারদিন সেভক থেকে রংপো পর্যন্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে সমস্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। ওই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সড়ক খুলছে তাই বেশ আশায় ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা। কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যাতেই১০ মাইলের তারখোলায় হুড়মুড়িয়ে পাহাড় ভেঙে নেমে জাতীয় সড়ক ফের অবরুদ্ধ হয়। জাতীয় সড়কের দু’পাশে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে। রাতভর ধস সরানোর পর শুক্রবার সকাল থেকে একমুখী যান চলাচল শুরু হয়। তীব্র যানজটে নাকাল দশা হয় পর্যটকদের।
মেল্লি, লাবারবোটায় বিরাট যানজট ছিল। পর্যটকদের ঘুরপথে যাতায়াতের পরামর্শ দেয় প্রশাসন। সিকিম ও কালিম্পংয়ের বাসিন্দা ও পর্যটকদের সড়কপথে মুনসং থেকে কালিম্পং হয়ে চিত্রে অথবা বাগরাকোট, লাভা, আলগাড়া এবং গরুবাথান, লাভা, আলগাড়ার রুটে যাতায়াতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিকল্প রুটেও তীব্র যানজটে পড়ে নাকাল হতে হয়েছে পর্যটকদের। অভিযোগ, শিলিগুড়ি থেকে সকালে রওনা হয়ে অনেক পর্যটক বিকেলেও গ্যাংটকে পৌঁছাতে পারেনি। রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “বিকল্প রুটগুলোর পরিস্থিতি ভালো নেই। তাই যানজটার যন্ত্রণা লেগেই আছে। ভরা পর্যটন মরশুমে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বারবার বন্ধ হবে ভাবা যায় না।”
জাতীয় সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ অক্টোবর অতিভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয় দার্জিলিং-কালিম্পং ও সিকিম। ধস নামে শিলিগুড়ি-সিকিম সড়ক যোগাযোগের ‘লাইফ লাইন’ ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিস্তীর্ণ এলাকায়। কালিম্পংয়ের চিত্রে লাগোয়া গেইল খোলায় জাতীয় সড়কে ‘সিঙ্কহোল’ তৈরি হয়। জাতীয় সড়কের তলা থেকে মাটি সরে তিস্তায় নেমে যায়। ব্যাহত হয় যান চলাচল। সেটা মেরামতির কাজ শেষ হওয়ার আগে শুক্রবার বিকেলে নতুন করে ধস নামে ২৯ মাইলে। সন্ধ্যায় নিগমের পক্ষ থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু সেটা করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে বন্ করা হয় জাতীয় সড়ক। কিন্তু খোলার পর ধস নামে। বারবার ভূমিধসে বিধ্বস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক মেরামতের কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেভাবে রাস্তা মেরামতের নামে পাহাড় কেটে নতুন রাস্তা বের করা হচ্ছে সেটা নিয়েও বিভিন্ন মহল নতুন করে বিপদের আশঙ্কা করছেন। ওই আশঙ্কা যে মোটেও অমূলক নয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারখোলার ঘটনা থেকে ফের প্রমাণিত হয়েছে বলে মত ওয়াকিবহল মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.