অর্ণব আইচ: কদিন আগে জগদ্দলে লাড্ডু কারখানার আড়ালে অস্ত্র কারখানার হদিশ পেয়েছিল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীকে । তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে উদ্ধার করা হল আরও একটি অস্ত্র কারখানা। তাও শহর কলকাতা থেকে এক্কেবারে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে। আগরপাড়ার কারখানার ধাঁচটা খানিকটা একই রকম। জগদ্দলে যেমন কারখানা করা হয়েছিল লাড্ডু কারখানার আড়ালে, এখানে তা করা হয়েছে শাড়ির দোকানকে সামনে রেখে।
এসটিএফ সূত্রের খবর, আগরপাড়ার ওই কারখানায় পিস্তলের ইস্পাতের কাঠামো তৈরি করা হত। সেই কাঠামো তার পর পাঠানো হত কাঁকিনাড়াতে। সেখানে এই কাঠামোর সঙ্গে বাকি অংশ জোড়া হত। সেখান থেকে মালদহের কালিয়াচক এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার একটি গ্রামে পাঠানো হত অসম্পূর্ণ অস্ত্রগুলি। সেখানেও একটি কারখানা তৈরি করা হয়েছিল। সেই কারখানাতে পিস্তলগুলি ব্যবহার উপযোগী করে বাংলাদেশের কারবারিদের হাতে তুলে দেওয়া হত।
আগরপাড়ার উষুমপুরে একটি দোতলা বাড়ির একদিকে ছিল শাড়ির দোকান, অন্যদিকে লেদ কারখানা। তারই আড়ালে চলছিল নাইন এমএম (9MM) পিস্তলের কাঠামো তৈরির কাজ। বুধবার দুপুরে সেই কারখানায় হানা দেয় এসটিএফ আধিকারিকরা। কারখানা থেকে একাধিক লেদ মেশিন এবং পিস্তলের কাঠামো উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। এসটিএফ সুত্রের খবর, জগদ্দল থেকে ধৃতদের জেরা করে সোমবার রাতে রবীন্দ্র সরণি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ওই চক্রেরই আরও দুই সদস্যকে। একজন ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা মহম্মদ আসফাক আহমেদ এবং অপরজন মুঙ্গেরের বাসিন্দা মহম্মদ আসলাম। তাদের কাছ থেকেই আগরপাড়ার ডেরার হদিশ মেলে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, প্রায় ছ’মাস আগে দোতলা ওই বাড়িটির একতলা ভাড়া দিয়েছিলেন বাড়ির মালিক কালাচাঁদ পাল। এসটিএফের গোয়েন্দাদের তিনি জানিয়েছেন, পাপ্পু খান নামে কামারহাটির এক ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে নিচের তলা ভাড়া নিয়েছিলেন লেদ কারখানা করার জন্য। সেইমতো কয়েকটি লেদ মেশিনও বসায় পাপ্পু। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিন-চার জন কর্মী কাজ করতেন এই কারখানায়। তবে লেদ কারখানায় কী করা হত, অর্থাৎ কী ধরনের জিনিস তৈরি হত, তা জানতেন না স্থানীয়রা। তবে প্রায়শই বাইরের লোকজন আসত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.