বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে লাঠি হাতে নিউটন দাস।
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ডহারবার: বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখ এই রাজ্যের ভোটার! সম্প্রতি এমনই অভিযোগ তুলে সরব হল বাংলার বিরোধী দল বিজেপি। শুধু তাই নয়, নিউটন দাস নামে ওই বাংলাদেশি যুবকের সঙ্গে তৃণমূলের এক ছাত্রনেতার ছবিও সামনে এনেছে বিজেপি। দাবি করা হচ্ছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে ওই বাংলাদেশি যুবকের। ভুয়ো ভোটার ইস্যুতে যখন রাজ্যে রাজনৈতিক ডামাডোল যখন চরমে, ঠিক সেই সময়ে এই অভিযোগে স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল শুরু হয়েছে।
গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নাকি যোগ দিয়েছিল নিউটন দাস। সম্প্রতি নিউটনের সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিজেপির দাবি, কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে সেই নিউটনেরই। নিউটন একটা সময়ে কাকদ্বীপের স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের দাসপাড়ার থাকত বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও নিউটনের পুরো পরিবার বাংলাদেশের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে।
এই ঘটনায় কাকদ্বীপেরই বাসিন্দা নিউটনের দাদা তপন দাস জানিয়েছে, “চার বছর হল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। করোনার পর এখানে পড়াশোনা করতে এসেছিল। শুনছি বাংলাদেশেই ও এখন থাকে। বাংলাদেশেরই ভোটার। এখানে কীভাবে ভোটার হয়েছে বলতে পারব না।”
এদিকে গেরুয়া শিবিরের তরফে নিউটনের সঙ্গে শাসকদলের এক ছাত্রনেতার ছবিও প্রকাশ্যে এনেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নিউটনের জন্মদিন পালন করেছেন ওই ছাত্রনেতা। বিজেপির দাবি, কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি নিউটন দাসের নাম তোলার পিছনে শাসক শিবিরের হাত রয়েছে। যদিও সে অভিযোগ খণ্ডন করেছেন সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি দেবাশিস দাস। তিনি বলেন, “নামখানার একটি স্কুলে হস্টেলে থেকে পড়ত নিউটন। স্কুলে আমার সঙ্গেই পড়ত। সেই সূত্রেই বন্ধুত্ব ছিল। আমরা সকল বন্ধুদের জন্মদিনে যেভাবে কেক কাটি, কয়েক বছর আগে ওর জন্মদিনেও কেক কেটেছি। এর বেশি কিছু নয়।”
একইসঙ্গে তিনি বলেন, “এখানে কীভাবে ভোটার কার্ড হয়েছে বলতে পারব না। কারণ যতদূর জানি, যখন ওর ভোটার লিস্টে নাম উঠেছে তখন আমি রাজনীতির কোনও পদেই ছিলাম না। বিজেপি যদি আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে তাহলে প্রমাণ-সহ এফআইআর করতে বলুন। চ্যালেঞ্জ করছি, কিছুই করতে পারবে না। আমি ওইসব অভিযোগে ভয় পাই না।”
উল্লেখ্য, এ রাজ্যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ও এখানে এসে অবৈধ উপায়ে ভোটার কার্ড তৈরির অভিযোগ বারবার করেছে বিজেপি। এই ঘটনায় আঙুল তোলা হয়েছে শাসকদলের দিকে। যদিও শাসকদল এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পালটা তোপ দেগে বলা হয়েছে সীমান্তরক্ষার দায়িত্বে থাকে শাহের দপ্তরের অধীনস্থ বিএসএফ। তাহলে অনুপ্রবেশ যদি ঘটে তার দায় কেন্দ্রের। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ সামনে এসেছে। তৃণমূল অভিযোগ করেছে, নির্বাচন কমিশনের ‘আশীর্বাদে’ ভোটার তালিকায় গরমিল করা হচ্ছে। ‘ভূতুড়ে’ ভোটার চিহ্নিতকরণে কমিটিও গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরইমাঝে বিজেপির এহেন অভিযোগে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.