শেখর চন্দ্র, আসানসোল: দেবীর বোধনে এখনও বাকি সাতদিন। জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বাতাসে পুজোর গন্ধ। সেজে উঠছে শহর থেকে শহরতলি। তবে আসানসোলের বার্নপুরে এখন বিষাদের সুর! কারণ, এখানে দুর্গার আবাহনেই বিসর্জন! দেবীপক্ষের সূচনায় পুজো শুরু হয়, একইদিনে বিসর্জন হয়ে যায়। একদিনেই বোধন থেকে দশমী এবং ঘট বিসর্জন। তাই পুজোর আনন্দ এখানে ফুরিয়ে যায় দ্রুত।
দামোদরের তীরে বার্নপুরের ধেনুয়া গ্রাম। সেখানেই কালীকৃষ্ণ আশ্রম। ১৯৩৭ সালে এই আশ্রমের প্রতিষ্ঠা হয়। আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ও সেবাইত ছিলেন যতীন মহারাজ। ১৯৭৮ সাল তাঁর গুরুদেব তেজানন্দ ব্রহ্মচারী স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো চালু করেছিলেন। মা এখানে ‘আগমনী দুর্গা’ বলে পরিচিত। দেবীর রূপও এখানে আলাদা। মা দুর্গা দশভুজা হলেও মহিষাসুরমর্দিনী নন, সঙ্গে নেই তাঁর পুত্র-কন্যারাও। তিনি একাই আসেন। তবে সঙ্গী তাঁর দুই সখী – জয়া ও বিজয়া।
প্রথমদিকে আগমনী দুর্গার রূপ ছিল অগ্নিবর্ণা। পরে শ্বেতশুভ্র হয়ে বাসন্তী গাত্রবর্ণ। মহালয়ার ভোর থেকেই পুজো শুরু হয়। একদিনেই সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী, দশমী। পুজো শেষে ঘট বিসর্জন। তবে মাতৃ প্রতিমা রেখে দেওয়া হয়। পুরোহিতের দাবি, বিভিন্ন অ্যাখ্যান অনুযায়ী পুজোর লোকাচারগুলি পালিত হয় এখানে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে সেবাইত যতীন মহারাজ মারা যান। এখন পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। একদিনের পুজোয় মেতে ওঠেন আশপাশের মানুষজন। বাইরের গ্রাম থেকেও আসেন বহু মানুষ। মিলন মেলায় পরিণত হয় এলাকা। সূর্য যত পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে, মন বিষণ্ণ হয়ে ওঠে সকলে। চারপাশে যখন শারদোৎসবের ভরপুর মেজাজ, সেই সময়ই তাঁদের আনন্দে ইতি পড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.