নিজস্ব সংবাদদাতা, কোতুলপুর: দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছিলেন শারীরিক অসুস্থতায়। ছুটির জন্য আবেদনও জানিয়েছিলেন একাধিকবার। অভিযোগ, আবেদন মঞ্জুর হওয়া দূর অস্ত, উলটে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এহেন ‘অন্যায়ে’ চরম হতাশার বশবর্তী হয়ে হাসপাতাল চত্বরেই ব্লক মেডিক্যাল আধিকারিকের অফিসের সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক স্বাস্থ্যকর্মী।
শুক্রবার ভরদুপুরে বাঁকুড়ার কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালের ঘটনা।সব্যসাচী বিশ্বাস নামে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। হাসপাতালে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাঁকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ব্যস্ত দুপুরের এই ঘটনায় কোতুলপুর গ্রামীন হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ দেবাঞ্জন ঘোষ বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকর্মী রাতে ডিউটি করতে অনিচ্ছুক ছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়ে তিনি হালকা ডিউটি চাইছিলেন। কিন্তু এইভাবে তো ডিউটি দেওয়া যায় না। তাই বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে জানানো হয়েছিল। এরপর তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। মেডিক্যাল টিম তাঁদের রিপোর্টে ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে ফিট বলে জানিয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁকে বিষ্ণুপুরে বদলি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। উনি এখান থেকে রিলিজও নিয়েছেন। কিন্তু বিষ্ণুপুরে কাজে যোগ দেননি। এই বদলির ব্যাপারে আমার কিছুই করার নেই।”
বিএমওএইচ আরও বলেন, “এদিন ওই স্বাস্থ্যকর্মী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে শুনেছি। তবে উনি আমার অফিসের সামনে বিষ খাননি। এখন উনি অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে জানানো হয়েছে”।
কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই কর্মরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সব্যসাচী বিশ্বাস। সম্প্রতি তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করে তাকে হালকা কাজ নেওয়ার জন্য বিএমওএইচ এর কাছে জানিয়েছিলেন। তার সেই দাবি মানেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁর অসুস্থতার দাবি উড়িয়ে দেয় মেডিক্যাল টিমও। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ। এরপরেই বিষ্ণুপুরে বদলি হন সব্যসাচী। তিনি কোতুলপুর গ্রামীণ থেকে রিলিজ নিলেও বিষ্ণুপুরে কাজে যোগ দেননি বলে অভিযোগ। এই বদলির প্রতিবাদেই এ দিন বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই স্বাস্থ্যকর্মী।
সব্যসাচীবাবু এদিন হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, “শারীরিকভাবে আমি অসুস্থ। ভারী কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই হালকা ডিউটি চেয়েছিলাম। ছুটিও চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার সেই আবেদন নাকচ করে আমাকে বিষ্ণুপুরে বদলি করা হয়েছে। এই বদলির প্রতিবাদে আমি বিষ খেয়ে আত্মহনন করতে চেয়েছিলাম”। বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কর্মীর শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.