প্রতীকী ছবি
অর্ণব দাস, বারাসত: মেয়ের সামনেই মাকে পুড়িয়ে মেরেছিল মদ্যপ বাবা। মধ্যমগ্রামের নন্দনকানন বেলতলা এলাকার এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী নাবালিকা মেয়ের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালত বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। বুধবার তার সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বারাসত আদালত। সাজা প্রাপকের নাম রিপন দাস, বয়স ৩৭ বছর। খুনের পাশাপাশা বধূ নির্যাতনের মামলাতেও আলাদা শাস্তি ঘোষণা হয়েছে। সবকটি সাজা একসঙ্গে চলবে।
মধ্যমগ্রামের নন্দনকানন বেলতলার বাসিন্দা রিপন দাস। নিহত স্ত্রী পিংকি দাসের সঙ্গে তার সাংসারিক বিবাদ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল, বাড়িতে রান্নার গ্যাস ফুরিয়ে যাওয়ায় স্বামীকে সিলিন্ডার আনতে বলেছিলেন পিংকি। কিন্তু রিপন সেকথা শোনেননি। তা নিয়ে দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, রাতে মদ্যপান করে ফিরে ফের এনিয়ে ঝগড়া করে রিপন। এই অশান্তির মধ্যেই স্ত্রীকে মারধর করে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল রিপন। গোটা ঘটনার সাক্ষী ছিল দম্পতির আট বছরের মেয়ে। অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তড়িঘড়ি তাঁকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পরেরদিন ১২ এপ্রিল মৃত্যু হয় গৃহবধূর।
নিহতের মা এনিয়ে মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করলে গ্রেপ্তার হয় অভিযুক্ত। মামলা চলে বারাসত আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক ১ কোর্টে। মামলায় ১৮ জন সাক্ষীদের মধ্যে অন্যতম ছিল নিহতের মেয়ে। দীর্ঘ ৮ বছর এই মামলা চলার পর মঙ্গলবার রিপনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক পরাগ নিয়োগী। বুধে তার সাজা ঘোষণা হয়। মামলার সরকারি আইনজীবী শ্যামলকান্তি দত্ত জানিয়েছেন, খুনের মামলায় দোষীর সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড-সহ ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং বধূ নির্যাতন মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে। অনাদায়ে ৬ মাস অতিরিক্ত কারাদণ্ড হবে। সবকটি সাজাই একসঙ্গে চলবে। এত বছর পর বাবার এই শাস্তিতে কিছুটা স্বস্তিতে ১৬ বছরের মেয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.