প্রতীকী ছবি
নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি: তিল তিল করে এগিয়ে চলেছে শ্রমজীবী হাসপাতাল। ধীর অথচ দৃঢ় পদক্ষেপে। ২০১২ সালে পথচলা শুরু শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালের। তারপর থেকে প্রতিদিনই কোনও না কোনও সংযোজন ঘটেছে এই গ্রামীণ হাসপাতালে।
এখানে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি, হাঁটু প্রতিস্থাপন-সহ অর্থোপেডিক অপারেশন, লেজার সার্জারি, গাইনি, ইএনটি, জেনারেল সার্জারি-সহ বিভিন্ন সার্জারি যেমন হয়, তেমনই চোখের ফেকো সার্জারিও করা হয়। আছে কম্পোনেন্ট সেরারেটর-সহ নিজস্ব ব্লাডব্যাঙ্ক। বত্রিশ স্লাইস সি টি স্ক্যান মেশিন, কালার ডপলার, সিআর্ম প্রভৃতি উন্নত যন্ত্রপাতি। এবার এই গ্রামীণ হাসপাতালের সাফল্য এল মুখমণ্ডলের ক্যানসার সার্জারিতেও।
বাটানগরের বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর সুকুমার রায়ের জিহ্বার ক্যানসার সার্জারি করা হল গত ২ জুলাই। মাস ছয়েক ধরেই সুকুমারবাবু ভুগছিলেন জিভে ঘায়ের সমস্যায়। ইএনটি চিকিৎসকের পরামর্শে বায়োপসি করে মেলে ক্যানসারের লক্ষণ। সুকুমার দ্বারস্থ হন শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে ডাক্তার জন্মেজয় চৌধুরি ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রে।অঙ্কোলজিস্ট ডাক্তার শ্যামসুন্দর অধিকারী ও অঙ্কো সার্জন ডাক্তার কামাক্ষাপ্রসাদ দলুইয়ের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে ৩০ জুন সুকুমারবাবু ভর্তি হন হাসপাতালে। ২ জুলাই সফল অপারেশন হয়।
ডাক্তার কামাক্ষাপ্রসাদ দলুই বলেন, অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে অপারেশন করতে হয়েছে। মুখমণ্ডলে অনেক সংবেদনশীল নার্ভ থাকে। তা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাতে নজর রাখতে হয়। প্রয়োজনে মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করতে হয়। আমরা অপারেশন করে জিভের চার সেন্টিমিটার মতো বাদ দিয়ে দিয়েছি। আশা করা যায় রোগি সুস্থ হয়ে উঠবেন। ডাক্তার শ্যামসুন্দর অধিকারী বলেন, “পোস্ট অপারেভিভ কেয়ার খুব জরুরি। এ সময় রোগী মুখে খাবার খেতে পারেন না। নাক দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে খাওয়াতে হয়।
সুকুমারবাবুর স্ত্রী মালা রায় বলেন, “শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালের পরিষেবা আমরা খুব ভালো পেয়েছি। আমার স্বামী ভালো আছেন। আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি, কিন্তু এখানে সবাই আপন করে নিয়েছেন।” শ্রমজীবী হাসপাতালের সহ-সম্পাদক চিকিৎসক অনিল সাহার কথায়, “আমাদের হাসপাতালে এতদিন শরীরের অন্যান্য অংশের ক্যানসার সার্জারি হলেও মুখমণ্ডলের ক্যানসার সার্জারি এই প্রথম হল।” হাসপাতালের সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার জানান, “মানুষের শ্রমে ঘামে আবেগে গড়া হাসপাতালে চিকিৎসার আরও অনেক দিগন্ত খুলে দেওয়ার চেষ্টা আমরা সর্বদা করছি। মানুষ সঙ্গে থাকলে সব সম্ভব হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.