Advertisement
Advertisement

মৌচাকে ঢিল মেরে চরম শিক্ষা, পতঙ্গের আক্রমণে অসুস্থ ৯

আধঘণ্টা ধরে মৌমাছির তাণ্ডবে স্তব্ধ চারপাশ।

Bee's attack on people in Katwa
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 11, 2019 7:51 pm
  • Updated:February 11, 2019 7:51 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: আক্রমণের মুখে পড়লে পালটা আক্রমণ, এটাই সাধারণত জীবজগতের নিয়ম। সেই নিয়মমতো বুড়ো অশ্বত্থ গাছে নিজেদের নিরাপদ বাসায় মনুষ্য প্রজাতির উৎপাত মোটেই সহ্য হয়নি মৌমাছিকুলের। কাটোয়া, ভাতার-কামারপাড়া সড়কের পাশে গাছে ঝুলে থাকা মৌচাকে ঢিল ছুঁড়তেই ধেয়ে এল মৌ-হামলা। অসুস্থ ৯ জন। সোমবার দিনের ব্যস্ত সময়ে প্রায় আধঘণ্টা ধরে চলল তাণ্ডব। আতঙ্কে যান চলাচল, মানুষের যাতায়াত কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেল। যেন কোনও মন্ত্রবলে কেউ স্তব্ধ করে দিয়েছে চারপাশ।

Advertisement

সড়কপথের পাশেই একটি অশ্বত্থ গাছে সুবিশাল মৌচাক। রাস্তা দিয়ে নিত্যদিন যানবাহন চলাচল করে। যাতায়াত করেন মানুষজন। কিন্তু এযাবৎ কারও কোনও সমস্যা হয়নি। ওই মৌমাছির ঝাঁক কারও মাথাব্যথার কারণ হয়নি। কিন্তু তারাই বা নিপীড়ণ মেনে নেবে কেন? ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের চণ্ডীপুর গ্রামের। না বুঝেই মজার ছলে মৌচাকে ঢিল ছুঁড়েছিলেন জনাকয়েক যুবক। তার খেসারত যে এভাবে দিতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি তাঁরা। মৌচাকে ঢিল ছোঁড়ার পর প্রায় আধ ঘন্টা ধরে তাণ্ডব চালাল হাজার মৌমাছির ঝাঁক। আধঘন্টা ধরেই ভাতার-কামারপাড়া রোডের যান চলাচল ব্যাহত হল। জোটবদ্ধ পতঙ্গের আক্রমণে আহত তিনজন পড়ুয়া-সহ অন্তত ৯ জন। তাদের মধ্যে পাঁচজন বর্তমানে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৌমাছির দলকে নিয়ন্ত্রণ করা যেহেতু পুলিশের কাজ নয়, তাই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। আধঘণ্টা ধরে মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার পর তারা নিজেরাই শান্ত হয়ে মৌচাকে ফিরে গেছে।

katwa-bee1

তত্ত্ব বিনিময়ের অলিখিত রীতিতে অন্য আমেজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে

জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুরে কয়েক মাস ধরেই এই গাছের মোটা একটি ডালে তৈরি হয়েছে সুবিশাল একটি মৌচাক। ঘটনার সূত্রপাত এদিন সকাল পৌনে দশটা নাগাদ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময় কেউ বা কারা ওই চাক লক্ষ্য করে একটি ঢিল ছুড়ে পালিয়ে যায়। তারপরেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছির দাপট শুরু হয়ে যায়। কাপশোর গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তাবাসুম নাজনিন নামে এক ছাত্রী আলিনগর থেকে টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরছিল রাস্তা ধরে। কাছাকাছি ছিলেন আলিনগরের বাসিন্দা ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্র পিন্টার শেখ ও আরমান শেখ। তারা স্কুলে সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে যাচ্ছিল। তিনজনকেই ছেঁকে ধরে মৌমাছির ঝাঁক। ওই পড়ুয়ারা বইপত্র রাস্তায় ফেলে পাশের নয়ানজুলিতে ঝাঁপ দেয়। মাথা ডুবিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেসময় দূর থেকে এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে দুজন স্থানীয় বাসিন্দা ওই পড়ুয়াদের বাঁচাতে যান। তাঁদেরও ঘিরে ধরে মৌমাছি। উপর্যুপরি হুল ফোটাতে থাকে।

বাঙালির গোটা সেদ্ধর পাতে হিট খাদানের জায়ান্ট রুই-কাতলা

এখানেই শেষ নয়। একসঙ্গে পাঁচজনকে নয়ানজুলিতে পড়ে থাকতে দেখে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন পথচলতি দুই সাইকেল আরোহী। মৌমাছির মোক্ষম কামড়ে কুপোকাৎ হন তাঁরাও। এদিকে রাস্তা দিয়ে তখন কয়েকটি টোটো, বাইক ও অন্যান্য যানবাহন চলছিল। তারাও ব্যাপারটা বুঝতে পেরে দাঁড়িয়ে পড়েন। গাড়ি ফেলেই ছুটে পালান টোটোযাত্রীরা। সমবেত মৌমাছির আতঙ্কে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যানচলাচল। আধ ঘণ্টার তাণ্ডবে তারা বুঝিয়ে গেল, ঢিল মারলে ‘হুল’ খেতে হয়।

ছবি: জয়ন্ত দাস

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement