প্রতীকী ছবি
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: কাজের টোপ দিয়ে যুবককে অপহরণ! তারপর প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মুক্তিপণের দাবি। অভিযোগ পেয়েই কলকাতার হোটেল থেকে অপহৃত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে হাওড়া গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে কলকাতার পঞ্চসায়রের একটি হোটেল থেকে ৪ যুবককে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা।
উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম অমৃত রাজ। বয়স ৩০ বছর। তিনি বিহারের বাসিন্দা। অভিযুক্তরা কাজের টোপ দিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসে। কী করে বিষয়টি জানতে পারল পুলিশ?সোমবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ গোলাবাড়ি থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন অমৃত রাজের এক বন্ধু রবিশ কুমার। অভিযোগ দায়েরের পরই তদন্তে নেমে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ পঞ্চসায়র এলাকা থেকে ওই যুবককে উদ্ধারের পাশাপাশি ৪ জনকে হাতেনাতে ধরে পুলিশ। ঠিক কী হয়েছিল?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা অমৃত রাজকে এলাকার এক বন্ধু জানান কলকাতায় এক পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করলে কাজ পাওয়া যাবে। সেই মতো অমৃত ও তাঁর দুই বন্ধু রবিশ কুমার ও বিট্টু কুমার কলকাতায় থাকা বিমলেশ কুমার নামের এক যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেই বিমলেশই গত রবিবার তিনজনকে কলকাতায় আসতে বলেন। আসলেই কাজ পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
সেই মতো অমৃত তাঁর দুই বন্ধুকে নিয়ে গত রবিবার হাওড়া স্টেশন আসেন। ওঠেন স্টেশন সংলগ্ন একটি হোটেলে। বিমলেশকে ফোন করা হলে তিনি সোমবার দুপুরে কাজ দেওয়ার নাম করে শুধুমাত্র অমৃতকে গড়িয়া এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে খাওয়া-দাওয়ার পর পঞ্চসায়রে একটি হোটেলে অমৃতকে নিয়ে যায় বিমলেশ। তখন বিমলেশের সঙ্গে জুটে যায় তার আরও তিন সঙ্গী মাঞ্জের আলম, জিয়ারুল রহমান লস্কর ও দীপজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ৪ জনে মিলে অমৃতকে পঞ্চসায়রের ওই হোটেলের ঘরে আটকে রেখে টাকা চেয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপর অমৃতকে দিয়ে তাঁর বিহারের বাড়িতে ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করায়। এদিকে রাত হয়ে গেলেও অমৃত হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন হোটেলে না ফেরায় অমৃতের বন্ধু রবিশ কুমার গোলাবাড়ি থানায় গিয়ে একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই তৎপর হয় পুলিশ। বিমলেশ, মাঞ্জের, জিয়ারুল ও দীপজয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিমলেশ আদতে দিল্লির বাসিন্দা। কিন্তু অভিযুক্ত মাঝেই মধ্যেই কলকাতায় আসেন।অমৃত -সহ তার দুই বন্ধুকে কাজের টোপ দিয়ে কলকাতায় নিয়ে এলেও অমৃতের পরিবারের তুলনামূলকভাবে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকায় তাকেই অপহরণ করে তার পরিবারের থেকে মুক্তিপণ চায়। বাকি দুই বন্ধু রবিশ ও বিট্টু কুমারকে ছেড়ে দেয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে ধৃতদের কাজই হল বিহারের গ্রামের ছেলেদের কলকাতায় কাজের টোপ দেখিয়ে নিয়ে এসে তাঁদের কাছ থেকে টাকাপয়সা নিয়ে তাদের সর্বস্বান্ত করে দেওয়া। অমৃত ছাড়া আর কারও সঙ্গে এরকম হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.