Advertisement
Advertisement
Birbhum

‘স্বপ্ন দেখতেন এনএসজি কমান্ডো হিসাবে যোগ দেওয়ার’, সুজয় ঘোষের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই শোকস্তব্ধ বন্ধু

বিশেষ সার্চ অপারেশনে গিয়ে প্রবল তুষারঝড়ের মধ্যে পড়ে শহিদ সুজয় ঘোষ।

Birbhum: A Friend of Sujoy Ghosh remained shocked after hearing is death news
Published by: Kousik Sinha
  • Posted:October 11, 2025 6:32 pm
  • Updated:October 11, 2025 7:33 pm   

দেব গোস্বামী, বীরভুম:  ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ সার্চ অপারেশনে গিয়ে প্রবল তুষারঝড়ের মধ্যে পড়ে শহিদ বাংলার ছেলে সুজয় ঘোষ। বীরভূমের রাজনগর কুন্ডিরার বাসিন্দা তিনি। ভারতীয় সেনার এলিট প্যারা স্পেশাল ফোর্সের সদস্য ছিলেন সুজয়। স্বপ্ন দেখতেন এনএসজি কমান্ডো হিসাবে যোগ দেওয়ার। সার্চ অভিযানে যাওয়ার সময় দাদা মৃত্যুঞ্জয়কে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ক’দিন কথা হবে না। কিন্তু সে কথাই যে শেষ কথা তা কে জানত? সুজয়ের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছতেই শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার।

Advertisement

একেবারে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন সুজয়। বাবা একজন কৃষক। ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন সুজয়। ২৮ বছর বয়সী এই জওয়ান প্যারা কমান্ডো ৫ গ্রুপের এই সৈনিক ছিলেন। গত বুধবার কাশ্মীরের দক্ষিণ অনন্তনাগের গাদুলে সন্ত্রাসদমন অপারেশন চলায় ভারতীয় সেনা। সেই অভিযান দলে ল্যান্স নায়েক সুজয় ঘোষ ছাড়াও ছিলেন ল্যান্স হাবিলদার পলাশ ঘোষ। অভিযান চলাকালীন তুষারঝড়ের মধ্যে পড়েন তাঁরা। নিখোঁজ হয়ে যান পলাশ ও সুজয়। দুই প্যারা কমান্ডোর খোঁজে তল্লাশি চালাতে থাকে সেনাবাহিনী। বরফাবৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় পলাশকে। আইসিইউতে থাকাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর।

তুষারধসে মৃত্যু হয় সুজয় ঘোষেরও। একেবারে ছোট বেলার বন্ধু দীনবন্ধু ঘোষ। বন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে কুন্ডিরার বাড়িতে ছুটে এসেছেন তিনিও। বন্ধুকে হারিয়ে কথা বলার ভাষা হারিয়েছেন দীনবন্ধু। তাও তিনি জানান, ”ছোট থেকে একসঙ্গেই বড় হয়েছি। ছোট থেকে ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার।” দীনবন্ধু আরও বলেন, সুজয়ের খুব ইচ্ছা ছিল প্যারা কমান্ডো থেকে এনএসজি কমান্ডো হিসাবে যোগ দেওয়ার। এজন্য কোনও ট্রেনিং মিস করত না। কিন্তু বন্ধু যে আর নেই তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না দীনবন্ধু। তিনি বলেন, ”সুজয় যে নেই বিশ্বাসই করতে পারছি না”।

অন্যদিকে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দাদা মৃত্যুঞ্জয়ও। কোনওভাবে তিনি জানান, ”ভাইয়ের সঙ্গে শেষ গত ৬ তারিখ কথা হয়েছিল। সেই সময় জানিয়েছিল, কয়েকদিন ফোনে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এদিন সেনাবাহিনী থেকে ফোন করে বলা হল, সুজয় আর আমাদের মধ্যে নেই।” আর একথা বলতেই কান্নায় আবারও ভেঙে পড়েন মৃতুঞ্জয়। বাংলার দুই জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিয়েছেন পাশে থাকার বার্তা। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। এই শোকের সময়ে আমাদের সরকার দুই পরিবারকেই সম্ভাব্য সকল সহায়তা করবে।’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ