জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বাঙালি হেনস্তার অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তারই মাঝে বনগাঁর বাগদায় বসেছে সিএএ ক্যাম্প। স্থানীয় বিজেপি নেতার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার শুরু হয় নাম নথিভুক্তকরণের কাজ। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু জোর তরজা।
সকাল থেকে ক্যাম্পে ভিড় জমান অনেকেই। ওই ক্যাম্পে যাওয়া বিজয় বিশ্বাস নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “আমার ঢাকায় বাড়ি ছিল। ২০১১ সালে বাংলায় এসেছি। সিএএ-তে আবেদন করেছি।” সুধীর পাণ্ডে নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, “আমি ২০০৩ সালে বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাগদার সাগরপুরে থাকি। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড নেই। তাই সিএএ ফর্ম ফিল আপ করতে এসেছি।” সিএএ ফর্ম ফিলআপ করাতে আসা অমলকৃষ্ণ পাণ্ডে বলেন, “১৯৮৬ সালে এসেছি। ফরিদপুরে থাকতাম। ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড আছে। আমাকে বলা হয়েছে ভোটার ও আধার কার্ড থাকলেই বলা হবে না। তাই সিএএ অনলাইন আবেদন করতে এসেছি।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “বিজেপি দ্বিচারিতা করছে তা বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছে। যারা উদ্বাস্তু তাঁদের এনআরসি, সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব কেড়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে পুশব্যাক করা হয়েছে। সাংসদ শান্তনু ঠাকুর মতুয়া কার্ড দিয়েছিলেন। বলেছিলেন এই কার্ড থাকলে নাগরিকত্ব পাবেন। কিন্তু মহারাষ্ট্রে দেখা গিয়েছে এই কার্ড থাকা ৪ জনকে পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এটা আইওয়াশ। মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। সিএএ, এনআরসির নামে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।” যদিও বিজেপি নেতা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফার মোদি সরকারের সময় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধন আইন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪-র আগে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়। কেবলমাত্র যাঁরা নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর আগে অন্তত এক বছর এবং তার আগে ১৪ বছরের মধ্যে অন্তত পাঁচ বছর ভারতে থেকেছেন তাঁরা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য। তবে অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে ওই আইনে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.