Advertisement
Advertisement
Murshidabad

মাঝ রাত্তিরে মাছ ধরার নৌকা চুরি করে পারাপার! মুর্শিদাবাদে তলিয়ে গেলেন ১৩

রাতে নৌকা পারাপার বন্ধ থাকায় অবৈধভাবে শ্রমিকরা মালদহে, বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

Boat capsized into river Ganga in Murshidabad, atleast 13 went missing, later rescued
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 20, 2025 8:02 pm
  • Updated:June 20, 2025 8:06 pm  

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: মাঝরাতে নৌ-পারাবার বন্ধ। মৎস্যজীবীদের নৌকায় ১১ জন শ্রমিককে নিয়ে গঙ্গা নদী পারাপার করতে গিয়ে বিপত্তি। ঘটনায় তলিয়ে গেলেন দুই মাঝি-সহ এগারোজন শ্রমিক। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও বিএসএফের তৎপরতায় বারোজনকে গঙ্গা থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও নিখোঁজ এক শ্রমিক। বছর বত্রিশের জাহাঙ্গীর শেখের বাড়ি মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগরের বাখরাবাদ চর এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সামশেরগঞ্জ থানার ধুলিয়ান পুরসভার সামনে কলাবাগান ঘাট ও মালদহ জেলার পারলালপুর ঘাটের মধ্যবর্তী এলাকায়। এই ঘটনায় নৌকার দুই মাঝিকে আটক করেছে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ।

নদীতে তল্লাশি। নিজস্ব ছবি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নৌকা উলটে গঙ্গা নদীতে মাঝি-সহ ১৩ জন যাত্রী পড়ে যান গঙ্গায়। তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের মধ্যে ১২ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও জাহাঙ্গীর শেখ নামে মালদহের এক বাসিন্দার খোঁজ মেলেনি শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত। এদিন সকাল থেকে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলার পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ডুবুরিরা তার সন্ধানে গঙ্গা নদীবক্ষে তল্লাশি শুরু করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে ডুবে যাওয়া নৌকা ও নিখোঁজ জাহাঙ্গীর শেখের ব্যাগ।

সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১টা নাগাদ বাঁকুড়া জেলা থেকে কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক কাজ শেষে নিজেদের বাড়ি, মালদহ জেলায় ফিরছিলেন। গভীর রাতে তাঁরা যখন ধুলিয়ানের ফেরিঘাটে এসে পৌঁছন, সেই সময় রাত হয়ে যাওয়ার কারণে প্রশাসনের নির্দেশে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার তাড়ায় তাঁরা রাতটুকু অপেক্ষা করতে চাননি। স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবীর সঙ্গে চুক্তি করে ৮০০ টাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে মাছ ধরার ছোট একটি নৌকা ভাড়া করেন। তাতেই ১১ জন মিলে চড়ে মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানার উদ্দেশে রওনা দেন। নৌকাটি চালিয়ে নিয়ে যান দুই মাঝি।

এই সেই মাছ ধরার নৌকা। নিজস্ব ছবি।

মাঝরাতে নৌকাটি যখন মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানার পারলালপুর ঘাটের কাছাকাছি আসে সেই সময় নদীর স্রোত খুব বেশি হয়ে ওঠে। নৌকার ধারণ ক্ষমতার তুলনায় বেশি যাত্রী থাকার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা উলটে যায়। ডুবে যাওয়া নৌকার মালিক রঞ্জন মণ্ডল জানিয়েছেন, ”রাতে আমার নৌকা কলাবাগান ফেরিঘাটে বাঁধা ছিল। রাতের অন্ধকারে দু’জন মৎসজীবী সেই নৌকাটি চুরি করে মালদহের শ্রমিকদের ঘাট পারাপার করে দেওয়ার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু মাঝ নদীতে গিয়ে আমার নৌকা ডুবে গিয়ে বেশ কয়েকজন তলিয়ে গিয়েছে বলে শুনেছি। শুক্রবার সকালে অন্য একটি ঘাটে আমার নৌকা খুঁজে পেয়েছি।”

ইতিমধ্যে গোটা বিষয়টি সামশেরগঞ্জ থানায় জানানো হয়েছে। নিখোঁজ জাহাঙ্গীর শেখের নিকট আত্মীয়দের বক্তব্য, মালদহের পারদেওনাপুর ও বাখরাবাদ চরের এগারো জন বাঁকুড়ায় নদীবাঁধে বস্তা ফেলার কাজে গিয়েছিল। সেখানে প্রচণ্ড বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার জন্য রওনা দেয়। মধ্যরাতে নৌকাতে গঙ্গা পারাপার করতে গিয়ে নৌকা ডুবে যায়। জাহাঙ্গীরের কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না বলে জানান তাঁরা। উদ্ধার হওয়া নৌকায় জাহাঙ্গীরের ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে। রাতের অন্ধকারে বেআইনিভাবে প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া মাছ ধরার নৌকা নিয়ে যাত্রী পারাপার করানোর অভিযোগে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ ধুলিয়ান পুরসভা দুই মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তাঁরা দুজন ১১ জন শ্রমিককে টাকার বিনিময়ে গঙ্গা নদী পারাপার করার জন্য নিয়ে গিয়েছিল।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement