সম্যক খান, মেদিনীপুর: ঐতিহাসিক মেদিনীপুর শহরে মেডিক্যাল কলেজ গড়ার প্রথম স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনিই। নিজের হাতে গড়া এনজিওর মাধ্যমেই মেডিক্যাল কলেজ গড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন প্রয়াত বাম নেতা দীপক সরকার। সেই মেডিক্যাল কলেজেই দান করা হল বাম নেতার দেহ।
বামফ্রন্ট সরকারের তখন রমরমা। মেদিনীপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ছিলেন দীপক সরকার। বিরোধী তো বটেই, নিজ দলেরও বিক্ষুব্ধদের ধরাশায়ী করে দ্রুতগতিতে নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়াচ্ছিলেন তিনি। তাঁর একের পর এক চালে কুপোকাৎ সেই সময়কার নেতা লক্ষ্ণণ শেঠ, তরুন রায়রা। সেইসময় কলকাতা ও বাঁকুড়ার মধ্যে আর কোনও মেডিক্যাল কলেজ ছিল না। সরকারি উদ্যোগে হওয়ার তেমন কোনও সম্ভাবনাও ছিল না বললেই চলে। ঠিক সেই আবহেই মেডিক্যাল কলেজ গড়ার স্বপ্ন দেখেন দীপকবাবু। তবে সরকারি উদ্যোগে নয়। নিজের হাতে গড়া এনজিওর মাধ্যমেই মেডিক্যাল কলেজ গড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দেন। এখন যেটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হিসেবে পরিচিত। ওই ভবনটির চারতলা পর্যন্ত তৈরি হয়েছিল দীপকবাবুর গড়া এনজিওর মাধ্যমেই। কিন্তু নানা আইনি জটিলতায় বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি ভবনটি মেডিক্যাল কলেজের ছাড়পত্র পায়নি।
সেই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর সঙ্গে দীপকবাবুর সম্পর্ক খুব একটা সুমধুর ছিল না। তা সত্ত্বেও একটা পর্যায়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে শেষমেশ মেডিক্যাল কলেজটি রাজ্য সরকারকেই হস্তান্তর করে দেন দীপকবাবু। আজও জেলার অধিকাংশ মানুষই মনে করেন ওইসময় দীপকবাবু যদি নিজের উদ্যোগে মেডিক্যাল কলেজ না গড়তেন তাহলে আজও হয়তো তা হত না। এদিন শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর দলের নেতাকর্মীরা যখন তার মরদেহ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে পৌঁছন তখন হাজির সকলেই আবেগপ্রবন হয়ে পড়েন। দীপকবাবুর চিকিৎসক পুত্র সুদীপ্ত সরকার বলেছেন, “বাবা আগে থেকেই দেহদানের অঙ্গীকার করে ফর্মপূরণ করে রেখেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর শরীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গবেষণার কাজে লাগুক। শেষ ইচ্ছা পূরণ করলাম।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.