Advertisement
Advertisement

Breaking News

Amoeba

‘মস্তিষ্কখেকো’ অ্যামিবার হানা বাংলায়! দীর্ঘ অসুস্থতার পর প্রাণে বাঁচলেন শ্রীরামপুরের প্রৌঢ়  

‘মস্তিষ্কখেকো’ অ্যামিবায় সুস্থ হওয়া সম্ভব? কী বলছেন চিকিৎসকরা?

Brain eating amoeba attacks man from hooghly, west bengal, treatment going on
Published by: Kousik Sinha
  • Posted:September 21, 2025 9:44 pm
  • Updated:September 21, 2025 9:44 pm   

সুমন করাতি, হুগলি: কেরলে নয়া আতঙ্কের নাম ‘মস্তিষ্কখেকো’ অ্যামিবা। ইতিমধ্যেই সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯। আক্রান্ত বহু মানুষ। একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই সে রাজ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই বাংলাতেও আতঙ্ক। ‘মস্তিষ্ক খেকো’ অ্যামিবার থাবা রাজ্যে। আক্রান্ত শ্রীরামপুরের বাসিন্দা পেশায় কল মিস্ত্রি প্রবীর কর্মকার।

Advertisement

জানা যাচ্ছে, গত এপ্রিল মাসে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। দীর্ঘ দু’মাস কাটাতে হয়েছিল হাসপাতালে। যদিও প্রবীরবাবু এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে এখনও। কিন্তু কীভাবে ‘মস্তিষ্কখেকো’ অ্যামিবায় আক্রান্ত হলেন প্রবীরবাবু?

দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন প্রবীর কর্মকার। কিন্তু গত এপ্রিল মাসে ভয়ঙ্করভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের দাবি, বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন প্রবীরবাবু। এমনকী হাঁটা চলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তার দেখিয়েও কাজের কাজ হচ্ছিল না। অবশেষে কলকাতা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন প্রবীর কর্মকার। সেখানে প্রায় দু’মাস ধরে চলে চিকিৎসা। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। আর তাতেই ধরা পড়ে প্রৌঢ়ের মগজে এক কোষী অ্যামিবা বাসা বেঁধেছে। এরপরেই শুরু হয় চিকিৎসা।

এখন অনেকটাই সুস্থ প্রবীরবাবু। আপাতত শ্রীরামপুরের বাড়িতেই রয়েছেন তিনি। তবে এখনও রয়েছে শারীরিক দুর্বলতা। প্রবীর কর্মকার জানিয়েছেন, ”কথা জড়িয়ে যেত আমার, কোনও জ্ঞান থাকত না।” জানা যায়, শ্রীরামপুর শেওড়াফুলি এলাকার গৃহস্থ বাড়িতে কল সারানো ও জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার কাজ করতেন ওই ব্যক্তি। ট্যাঙ্কের নোংরা জল থেকেই কি প্রবীরবাবুর মস্তিষ্কে বাসা বাঁধল অ্যামিবা? এমনটাই অনুমান পরিবারের।

আক্রান্ত প্রৌঢ়ের স্ত্রী পম্পা কর্মকার বলেন, ”আমরা প্রথমে কিছুই বুঝতে পারিনি। হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসকরাই বললেন কোনওভাবে মস্তিষ্কে অ্যামিবা বাসা বেঁধেছে। সেই কারণেই শারীরিক এই অসুস্থতা দেখা দিয়েছে।” পম্পাদেবীর কথায়, ”একদমই বিছানা থেকে উঠতে পারছিলেন না। সেই অবস্থা থেকে এখন অনেকটাই ভালো আছেন। সবার সঙ্গে কথা বলছেন। হাঁটাচলাও করছেন।” তবে চিকিৎসকরা প্রবীরবাবুকে টাইম কলের জল খেতে নিষেধ করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।

বলে রাখা প্রয়োজন, মগজখেকো অ্যামিবার থাবায় বাংলায় গত দু’বছরে ২৫ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও ৭০ শতাংশ রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এই বছর দুজনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে।

ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডাঃ সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, “এই বিষয়ে আমাদের রাজ্যের মানুষের এখনই উদ্বেগের কিছু নেই। যেহেতু নাগলেরিয়া ফাউলেরি নামক আদ্যপ্রাণীটির চিকিৎসা আছে, সময় মতো চিকিৎসা করলে আক্রান্তকে সারানো যায়।” আর সেই উদাহরণ শ্রীরামপুরের বাসিন্দা পেশায় কল মিস্ত্রি প্রবীর কর্মকার।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ