Advertisement
Advertisement

সম্প্রীতির নজির, মুসলিম যুবকের দেওয়া রক্তে প্রাণে বাঁচলেন হিন্দু

মুছে গেল জাতপাতের ভেদাভেদ।

Communal harmony in Kalna
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:December 14, 2018 12:59 pm
  • Updated:December 14, 2018 12:59 pm   

রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: সম্প্রীতির নজির কালনায়। জাতপাতের ভেদাভেদ ভুলে হিন্দু ভাইকে বাঁচাতে রক্ত দিলেন মুসলিম যুবক। মধুমেহ রোগে আক্রান্ত ছিলেন সমুদ্রগড়ের বাসিন্দা উত্তম হালদার। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন মধুমেহ রোগ থেকে তাঁর কিডনির সমস্যা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁকে রক্ত নিতে হবে। কিন্তু এ নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ বিরল হওয়ায় কোনও দাতা পাচ্ছিলেন না উত্তম হালদার। শেষে মিসবাউল শেখ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে রক্ত পান তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে কালনা হাসপাতালে রক্ত নেওয়া হয় মিসবাউল শেখের। তারপরই সেই রক্ত পেয়ে সুস্থ হন উত্তমবাবু। স্থানীয়রা বলছেন, সম্প্রীতির এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন মিসবাউল।

Advertisement

এটিএমের তথ্য হাতিয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার মহারাষ্ট্রের দুই দুষ্কৃতী ]

অসুস্থ উত্তমবাবুর মা শোভারানি দেবী জানান, কয়েক বছর আগেই তাঁর ছোট ছেলের মৃত্যু হয়। সেও মধুমেহ রোগের রোগী ছিল। তার কিছু দিন পরেই মধুমেহ রোগ ধরা পড়ে উত্তমের। ক্রমেই তাঁর শারীরিক অবনতি হচ্ছিল। দেহ ফুলে যাচ্ছিল। ডাক্তার দেখিয়েও কোনও ফল হয়নি। অবশেষে দিন পনেরো আগে দক্ষিণ ভারতে তিনি চিকিৎসা করাতে যান। সেখানেই চিকিৎসকরা জানান, তাঁর শরীরে রক্তের উৎপাদন কম হচ্ছে। তাঁর রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু বিরল প্রকৃতির রক্ত হওয়ায় সমস্যায় পড়েন তিনি। ব্লাড ব্যাংকে যোগাযোগ করেও রক্ত পাননি। চারিদিকে খোঁজ শুরু হয়। স্থানীয় বন্ধুরা তাঁর হয়ে স্যোশাল মিডিয়াতেও প্রচার চালায়। তাতেও সাড়া মেলেনি। কালনায় ফিরে এসে স্থানীয় সমাজসেবী শ্যামল চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি ও ছেলে উত্তম। তিনি বিভিন্ন এলাকায় ব্লাড ক্যাম্প আয়োজন করেন। তিনিই পুরনো রেজিস্টার খাতা দেখে জানতে পারেন সমুদ্রগড়ের বাসিন্দা  মিসবাউলের রক্তের গ্রুপ এ নেভেটিভ। তারপরেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

জয়নগর কাণ্ডে তদন্তে সিআইডি, গ্রেপ্তার চার ]

এক কথাতেই রাজি হন মিসবাউল। শ্যামলবাবু বলেন, “অনেকেই অভিযোগ করেন আমাদের সমাজে জাতপাতের ভেদাভেদ রয়েছে। কিন্তু আজ প্রমাণ হল আমাদের সমাজে কোনও ভেদাভেদ নেই। আমরা সকলে সকলের জন্যে।” হাসপাতালে রক্ত নিতে নিতে মিসবাউলের হাতে হাত রেখে উত্তম বলেন, “মিসবাউলবাবুর সঙ্গে আগে কখনও পরিচয় হয়নি। কোনও কিছু না ভেবেই তিনি আমার জন্য রক্ত দিতে ছুটে এলেন। আমার প্রাণ বাঁচালেন। আমি ও আমার পরিবারের সঙ্গে তাঁর একটি নতুন সম্পর্ক তৈরি হল।” একই কথা বলেছেন উত্তমের মা শোভারানি দেবীও। মিসবাউলের বক্তব্য, “আমাদের সকলের রক্তই এক। এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। আজ আমি উত্তমবাবুকে রক্তে দিয়ে  পাশে দাড়িয়েছি। আগামী দিনে তিনি আমার পাশে দাঁড়াবেন। এটাই মানবিকতার পরিচয়।” 

ছবি- মোহন সাহা

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ