Advertisement
Advertisement

এই গ্রামে দুর্গার পাশাপাশি পীরের আরাধনাও করেন হিন্দুরা

সম্প্রীতির অনন্য নজির।

Communal harmony in Katwa
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:December 12, 2018 6:15 pm
  • Updated:December 12, 2018 6:15 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: বারোয়ারি দুর্গামন্দিরের সঙ্গেই পীরের আস্তানা। মন্দিরে নিত্য পুজো হয় দেবীর। পাশাপাশি পীরতলাতেও নিয়ম করে হয় শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। দুইয়ের মধ্যে কোনও বিবাদ নেই। ধর্ম নিয়ে যখন জায়গায় জায়গায় রাজনীতি চলছে, তখন রোজ নিয়ম করে এই গ্রামে দুর্গা ও পীরের আরাধনা করছে হিন্দু পরিবারগুলি। প্রায় দুই শতাব্দীকাল ধরে এমনই এক সম্প্রীতির নজির ধরে রেখেছেন পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানার চাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

মঙ্গলকোট ব্লকের মাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চাকুলিয়া গ্রাম। অজয় নদের কাছাকাছি গ্রামটির অবস্থা্‌ন। প্রায় দেড়হাজার জনবসতি। অধিকাংশই কৃষিজীবী পরিবার। গ্রামের পূর্বদিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের বসবাস। পশ্চিমাংশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলি রয়েছে। চাকুলিয়া গ্রামে বরাবরই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হৃদ্যতার সম্পর্ক রয়েছে। চাকুলিয়া গ্রামের ঘোষপাড়ায় রয়েছে বারোয়ারি দুর্গামন্দির। বহু পুরনো এই বারোয়ারি পুজো। পাকাঘরে টিনের ছাউনি দেওয়া দেবীর মন্দির। এই মন্দিরের দরজার সামনেই রয়েছে পাঁচ পীরের আস্তানা। কিন্তু পীরের আরাধনা করতে মুসলিম পরিবারগুলি রোজ আসে না। রোজ দু’বেলা দুর্গামন্দিরে পূজার্চনার সঙ্গে সমানভাবে পুজো করা হয় পীরের আস্তানায়। দুই এই নিত্যসেবা চালিয়ে আসেন ঘোষপাড়ার হিন্দুরাই।

সংশোধনাগারে বন্দির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, আত্মহত্যা বলে দাবি পুলিশের ]

বারোয়ারি দুর্গাপুজো কমিটির সম্পাদক প্রকাশচন্দ্র ঘোষ বলেন, “আমরা জন্ম থেকেই দুর্গামন্দির ও পীরতলার সহাবস্থান দেখে আসছি। আমাদের পুর্ব পুরুষরাও দেবীর পুজোর সঙ্গে সমান মর্যাদায় পীরের পুজো করে এসেছেন। আমরাও সেই প্রথা ধরে রেখেছি।” কবে থেকে এই প্রথার সূচনা তার নির্দিষ্ট কোনও ঐতিহাসিক তথ্যপ্রমাণ গ্রামবাসীদের হাতে নেই। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা ভবানীপ্রসাদ ঘোষ বলেন, “অনেককাল আগে ঘোষপাড়ায় কয়েকঘর মুসলিম পরিবার বাস করতেন। কোনও কারণে তাঁরা অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। তখন থেকেই হিন্দুরাই পীরতলার দেখভাল করে আসছেন।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকুলিয়া গ্রামে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ইদ সাড়ম্বরে পালন করা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয় না মহরম। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা মফু শেখ বলেন, “ঘোষপাড়ার পীরতলায় হিন্দুরাই সারা বছর পুজো দেন। তবে বছরের একদিন মুসলিমপাড়া থেকে চাঁদা তুলে পীরতলায় উৎসব করা হয়। তখন একসঙ্গে আমরা পীরের উৎসব পালন করি।” স্থানীয়দের বিশ্বাস, বর্ষাকালে অনাবৃষ্টি দেখা দিলে পীরের আস্তানায় ভোগ দিলে হাতেনাতে ফল পাওয়া যায়। তখন চাঁদা তুলে পীরতলা ও দুর্গামন্দিরে গ্রামবাসীরা পুজো দেন। মাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য চাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিল্লাল শেখ বলেন, “আমাদের গ্রামে দুই সম্প্রদায়ের ভিতর কোনও বিভেদ নেই। তাই পুজোপার্বণে হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে আনন্দোৎসব পালন করেন।”

ছবি- জয়ন্ত দাস

ধান রাখাকে কেন্দ্র করে তুমুল মারপিট, আরামবাগে পথ অবরোধ স্থানীয়দের ]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement