Advertisement
Advertisement
Tilpara Bridge

তিলপাড়া সেতুতে ফাটল, বিচ্ছিন্ন উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ

এই সেতুর উপর যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।

Crack in Tilpara Bridge, communication between North Bengal and South Bengal cut off

তিলপাড়া সেতু পরিদর্শনে সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা। –শান্তনু দাস

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:August 2, 2025 5:52 pm
  • Updated:August 2, 2025 5:52 pm   

স্টাফ রিপোর্টার, সিউড়ি: তিলপাড়া জলাধারে মিহিরলাল সেতুতে ফাটল। ফলে যান চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন‌্য বন্ধ তিলপাড়া সেতুতে। এর জেরে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানান, উত্তরবঙ্গগামী গাড়িগুলি সিউড়ি থেকে সাঁইথিয়ায় হয়ে ঘুরে যাবে। আবার উত্তরবঙ্গ থেকে আসা গাড়িগুলিও সাঁইথিয়া হয়ে যাতায়াত করবে। কবে এই সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে, তা প্রশাসন এখনও জানায়নি।

Advertisement

তিলপাড়া সেতুতে ফাটল পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রথমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল জলের গতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেতু পরিদর্শন করেন সেচ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস সেনগুপ্তের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল। সন্ধ্যায় জেলাশাসক বিধান রায় ও জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ তিলপাড়া ব্রিজ দেখতে যান। তারপর যান চলাচল বন্ধ করে দেন। জরুরি পরিস্থিতিতে জল বন্ধ করে সেখানে জেসিবি মেশিন নামিয়ে বালি সংগ্রহ করে তা ভরাটের চেষ্টা চলছে। চিফ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘আমাদের মেরামতির কাজ চলছিল। তার মধ্যেই ভারী বর্ষণ। ডিভাইডার ওয়ালের তলা থেকে বালি সরে গিয়ে ফাটল ধরেছে। এখন ক্ষতি যাতে না বাড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।’’

৭৩ বছরের পুরনো মিহিরলাল তিলপাড়া জলাধারে গতবছরই ফাটল দেখা দিয়েছিল। গত বছরে অতিবৃষ্টির জেরে জলের গতি আটকানোর জন্য পিলার করা হয়েছিল। পিলারের তলার বালি সরে গিয়ে সেগুলি দুর্বল হয়ে পড়েছে। যার জেরে গতবছর নভেম্বর মাসে দিল্লি ও রাজ্যের নদী ও বাঁধ বিশেষজ্ঞরা এসে জলাধারের তলায় গিয়ে ফাটল ও উলটে পড়া পিলারগুলি পর্যবেক্ষণ করেন। বিশেষজ্ঞ দলের সদস‌্য এস কে শর্মা, সমীর শুক্লা, বারিদ গুপ্তা, নীতা অরোরা ও ওয়াই কে হন্ডা এসে জলাধারের চারিদিক ঘুরে পর্যবেক্ষণ করেন।

দেশের প্রথম পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনায় সিউড়ির কাছে ময়ূরাক্ষী নদীর উপর জলাধারের পরিকল্পনা করে কেন্দ্রীয় সেচ মন্ত্রক। ময়ূরাক্ষী নদীর অববাহিকা তিলপাড়ায় জলাধার নির্মাণ হয়। সেই জলাধারের সেতুর দু’দিকের তিনটি করে গেটের তলায় ফাটল দেখা দেয়। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ফাটল মেরামতির জন্য গেটের তলা থেকে সরে যাওয়া বালি ফের মেশিন দিয়ে তার তলায় ঢুকিয়ে তা পূরণ করার কাজ চলছিল। লক্ষ্য ছিল বর্ষার আগেই সেই কাজ সম্পূর্ণ করার। সেচ দফতর সূত্রে খবর, বালি ভর্তি করতে ইতিমধ্যে ৩০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ১০ ও ২৯ জুলাই ভারী বর্ষণের জেরে ২০৬ মিটারের উপর দিয়ে জল বইতে থাকে। যা বিপদসীমার কাছাকাছি।

সিদ্ধেশ্বরী নদীর জলও ময়ূরাক্ষীতে এসে মেশে। কুশকর্নীর জলও নদীতে এসে পড়ে। এর সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের ম্যাসানজোড় থেকে বাড়তি জল ছাড়া হয়। তার জেরে সাত নম্বর গেটের ডিভাইডারের তলায় ফের বড়সড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যার জেরে শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের সংযোগকারী সেতুর উপর যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। একমুখী করা হয় যান চলাচল। পরে সন্ধ‌্যায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়। এর জেরে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ বিচ্ছিন্ন। সেচ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ব্রিজের অবস্থা ভাল নয়। ফ্লোর থেকে বেডটা নেমে গিয়েছে অনেকটা। সেখানে মাটি ভরাটা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। দেখা যাক কতটা তা করা যায়। আমরা সবরকমভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ