Advertisement
Advertisement
North Bengal

ফের মসিহা ইরফান! মালবাজারে রাতের অন্ধকারে অন্তঃসত্ত্বাকে উদ্ধার করে ‘হিরো’ এই চিকিৎসক

'এটাই কাজ। মহান হওয়ার কিছু নেই।' বলছেন এই চিকিৎসক।

Doctor Irfan rescued pregnant woman from Malbazar amid north bengal disaster
Published by: Kousik Sinha
  • Posted:October 8, 2025 8:00 pm
  • Updated:October 8, 2025 9:54 pm   

অরূপ বসাক, মালবাজার: কথায় আছে ‘জীবে প্রেম করে যে জন, সে জন সেবিছে ঈশ্বর।’ তা আবারও প্রমাণ করলেন নাগরাকাটার বিএমওএইচ চিকিৎসক ইরফান হোসেন। ভয়ংকর প্লাবনে ভেঙে পড়েছে সেতু! বিধ্বস্ত কালভার্ট। বিপদ হাতে নিয়েই চলাফেরা করতে হচ্ছে মানুষজনকে। এর মধ্যেই রয়েছে হাতির উপদ্রব। যে কোনও সময় ধেয়ে আসতে পারে বিপদ। চারপাশ জুড়ে একাধিক প্রতিকূলতা। এই অবস্থায় জীবনদূত হিসেবে হাজির হলেন নাগরাকাটার বিএমওএইচ চিকিৎসক ইরফান হোসেন। রাতের অন্ধকারে অন্তঃসত্ত্বাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন তিনি এবং ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের টিম। ইরফানের কাজের প্রশংসায় গোটা এলাকা। যদিও তাঁর দাবি, ”এটাই কাজ। মহান হওয়ার কিছু নেই।”

Advertisement

ঘটনাটি মঙ্গলবার নাগরাকাটার খেরকাটা গ্রামের। একে দুর্যোগ কবলিত এলাকা, এর মধ্যে গভীর রাত। হঠাৎ করেই ২০ বছরের শিলা খারিয়ার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে যন্ত্রণা। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। খবর যায় ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরে। সেই খবর পৌঁছতেই আর দেরি করেননি চিকিৎসকরা। দ্রুত বেরিয়ে পড়েন ইরফান হোসেন। গভীর রাত হওয়ায় চারপাশ কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। নিজেদের বিপদের কথা চিন্তা না করেই সিভিল ডিফেন্সের বোটে নদী পার হন ইরফান হোসেন-সহ চিকিৎসক কৃষ্ণেন্দু সরকার, মুন্না হক।

শুধু নদী পার হওয়াই নয়, ওই অন্ধকারে মোবাইলের আলোয় পায়ে হেঁটে ছুটে যান গ্রামের দিকে। ততক্ষণে গাঠিয়া সেতুর অপর প্রান্ত পর্যন্ত শিলাকে পরিবারের লোকেরা গাড়িতে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে স্ট্রেচারে করে তাঁকে নদী পর্যন্ত নিয়ে আসেন স্বাস্থ্য দপ্তরের টিম। তারপর বোটে নদী পার করে, অ্যাম্বুল্যান্সে প্রথমে নাগরাকাটা শুলকাপাড়া হাসপাতাল এবং পরে মালবাজার হাসপাতালে পৌঁছনো হয়।

রাতের অন্ধকারেই মহিলাকে উদ্ধার করছেন চিকিৎসকরা।

আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন শিলা খারিয়া। জানা গিয়েছে, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। বিএমওএইচ চিকিৎসক ইরফান হোসেন জানিয়েছেন, “এটা মহান কিছু নয়, এটা আমাদের কর্তব্য।” উল্লেখ্য, দু’দিন আগেই ইরফানকে এনডিআরএফের তৈরি করে দেওয়া জিপ লাইনে ঝুলে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে দেখা যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিএমওএইচের নদীঘাট পার হওয়ার সেই ভিডিও বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল৷ স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, ”মানুষের বিপদের সময় মানুষ না দাড়ালে কে দাঁড়াবে।” অন্যদিকে স্থানীয়দের দাবি, স্বাস্থ্য কর্মীদের এই ঘটনা শুধু সাহসিকতার নয়, মানবিকতারও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ