Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja 2025

পুজোর জামাকাপড় রইল পড়ে, কন্যাশোকে ঘরবন্দি হয়েই উৎসব কাটাল যাদবপুরের ছাত্রীর পরিবার

পুজোর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে মৃতদেহ উদ্ধার হয় তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর।

Durga Puja 2025: family of dead student of Jadavpur University spent festive time alone

ফাইল ছবি

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 3, 2025 8:32 pm
  • Updated:October 3, 2025 8:34 pm   

অর্ণব দাস, বারাকপুর: পুজোয় কেনা হয়েছিল হলুদ শাড়ি, প্যান্ট-জামা। ঠিক ছিল, চতুর্থী ও পঞ্চমীর দিন কম ভিড়ে বন্ধুদের সঙ্গে কলকাতায় প্যান্ডেল হপিং করবে মেয়ে। ষষ্ঠী থেকে থাকবে পাড়ার মণ্ডপে। কিন্তু এসব কিছুই হল না। পুজোর কয়েকদিন আগেই অকস্মাৎ সকলকে ছেড়ে চলে গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডল। গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝিলপাড় থেকে উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। পুজোর দিনগুলিতে তাই মেয়ের শোকে ঘরবন্দিই রইলেন বাবা অর্ণব মণ্ডল, মা মীনাক্ষীদেবী। অন্যান্য বছর পুজোর দিনগুলো স্মরণ করলেন, কীভাবে মেয়েকে নিয়ে আনন্দে কেটেছিল সেই সময়টা।

Advertisement

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ইংরেজি অনার্স ছাত্রী অনামিকার বাড়ি উত্তর দমদম পুরসভার ২৬নম্বর ওয়ার্ডের নিমতার ললিত গুপ্ত স্ট্রিটে। পাড়া-প্রতিবেশী তাঁকে ‘মিষ্টু’ বলে ডাকত। অত্যন্ত শান্ত, মেধাবী, মিশুক স্বভাবের বলে মিষ্টুকে পাড়ার সকলেই স্নেহ করতেন। ছোট থেকে মেধাবী মিষ্টুকে নিয়ে পরিবার, আত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশীর অহংকারের শেষ ছিল না। তাঁরা কেউই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্ত মিষ্টুর এহেন পরিণতি মেনে নিতে পারেননি। তাই পাড়ায় দুর্গাপুজো হলেও বিগত বছরগুলির মতো এবছর তত আনন্দও ছিল না।

ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পাড়ার মণ্ডপে ছোটদের সঙ্গেই পুজোয় আনন্দ করত অনামিকা। তাঁরা এবছর অর্ণববাবুর সঙ্গে দেখা করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। পুজোর জন্য কেনা জামাকাপড়ের মধ্যে একটি ড্রেস পরে সেদিন কলেজের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন অনামিকা। সেদিনই মেয়ের করুণ পরিণতি হওয়ায় শেষকৃত্যের সময় পুজোর কেনাকাটাও দাহকার্যে দিয়ে দিয়েছিল পরিবার। অর্ণববাবুর মা অর্থাৎ অনামিকার ঠাকুমার মৃত্যু হয়েছিল ক্যানসারে। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি পুজোয় বেরতেন না। তবে মীনাক্ষীদেবী মেয়ের সঙ্গে পাড়ার মণ্ডপে থাকতেন। অষ্টমীতে তাঁরা বারাকপুর রামকৃষ্ণ মিশনে যেতেন। কিন্তু একমাত্র মেয়ের মৃত্যু পর পুজোয় কেউই দেবী দর্শন করেননি, মিষ্টুর স্মৃতি আঁকড়ে বাড়িতেই ছিলেন তারা।

অর্ণববাবু জানালেন, “বিশ্ববাংলা হাট থেকে পুজোর শাড়ি কিনেছিল। সেই শাড়ি-সহ পুজোয় কেনা জামাকাপড় শেষকৃত্যের সময় দিয়ে দিয়েছিলাম। মেয়ে ভিড় পছন্দ করত না। তাই ঠিক করেছিল চতুর্থী ও পঞ্চমীর মধ্যে একদিন উত্তর কলকাতা, অন্যদিন দক্ষিণ কলকাতায় বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরবে। সেই বন্ধুদেরই আমরা সন্দেহের তালিকায় রেখেছি। মেয়েকে হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়েই পুজোয় স্ত্রীর সঙ্গে বাড়িতেই কাটিয়েছি।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ