সুমন করাতি, হুগলি: এ যুগের অগ্নীশ্বর! প্রিয়জনের চেয়েও বড় কর্তব্য রক্ষা। বাবার মৃত্যুতেও সেই কর্তব্যে অবিচল রইলেন হুগলির চিকিৎসক। মৃত্যুর পর বৃদ্ধ বাবার দেহ পড়ে রইল ঘরে। চোখের জল সামলে রোগী দেখা শেষ করে তবেই বাবাকে নিয়ে তিনি শেষকৃত্য করতে গেলেন তিনি। ডাক্তারবাবুর এমন দায়িত্ব দেখে সকলে ধন্য ধন্য করেছেন। কতটা মনের জোর হলে তবে এমনটা করা যয়া, তা হয়ত ভাবতেই পারছেন না কেউ।
চুঁচুড়ার ইমামবাজার অঞ্চলে শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ব্যতিক্রমী ডাক্তার। তিনি রাত জেগে রোগী দেখেন। দূরদূরান্ত থেকে রোগী আসে তাঁর কাছে। শুধু হুগলি জেলাই নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও অনেকে আসেন ডাক্তারবাবুর কাছে চিকিৎসা করাতে। রোজকার মতো শুক্রবারও রোগী দেখছিলেন শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ তার কিছুক্ষণ আগে তাঁর বাবা, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন। কিন্তু ডাক্তারবাবুকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। নির্বিকার মুখে তিনি কর্তব্যনিষ্ঠ হয়ে রোগী দেখে চলেছেন। বাবার মৃত্যুতেও বিরাম নেই। ডাক্তারবাবু জানান, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এসেছেন রোগীরা। ফিরে গেলে তাঁদের ভোগান্তি হবে। তাই বাবার দেহ বাড়িতে রেখে আগে তিনি চেম্বারে এসে রোগীদের চিকিৎসা করলেন। তারপর বাবাকে নিয়ে শ্মশানে গেলেন শেষকৃত্য করতে। ডাক্তার শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কর্তব্য ‘অগ্নীশ্বর’ সিনেমার উত্তম কুমারকে মনে করিয়ে দেয়।
চুঁচুড়া পুরসভার কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ দত্ত বলেন, ”অনেক গরিব মানুষ ডাক্তারবাবুর কাছে আসেন। রাত দুটো, তিনটে পর্যন্ত বসে রোগী দেখেন। কোনও নির্দিষ্ট ফিজ নেই। যাঁর যা সামর্থ্য, তাই দেন। কোনও চাহিদা নেই। চুঁচুড়া ছাড়া অন্য জেলা থেকেও রোগীরা আসেন, ভালো চিকিৎসা পান বলে। এমন ডাক্তারবাবুর জন্য গর্ববোধ করি আমরাও।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.