আতঙ্কিত বাবা-মা (ছবি-বাসুদেব ঘোষ)
সিউড়ি, নন্দন দত্ত: নেশার টাকা দিতে রাজি হননি। বৃদ্ধ বাবা-মাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল মাদকাসক্ত ছেলের বিরুদ্ধে। টাকা না পেলে বাবা মাকে খুন করবে সে। এমন হুমকির পর কোনও উপায় দেখতে না পেয়ে ছেলেকে গ্রেপ্তারের আরজি জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ আক্রান্ত দম্পতি। এদিকে মারধরের অভিযোগ পেয়েও তেমনভাবে সক্রিয় নয় পুলিশ। আতঙ্কে গৃহবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন দম্পতি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ির ছ’নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিকগুনা পাড়ায়।
[লাগাতার বৃষ্টিতে দিঘায় ভাঙল বিশ্ববাংলার লোগো]
অভিযুক্ত যুবকের নাম কল্লোল জানা। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী তরুণ কুমার জানা। দীর্ঘদিন ধরেই সিউড়ি শহরের মল্লিকগুনা পাড়ায় তাঁরা বসবাস করছেন। আপাত নিরীহ দম্পতির যত অশান্তি ছেলে কল্লোলকে নিয়েই। ছাত্রজীবনেই কুসঙ্গে পড়ে বদলে যায় সে। স্কুলে থাকাকালীন নেশা করা শুরু করে। অল্পদিনেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় লেখাপড়া হয়নি। স্বাভাবিকভাবে তার বয়সী অন্যরা চাকরি, ব্যবসা বাণিজ্য করলেও কল্লোল গোটা দিন মাদকের ঘোরেই থাকত। অভিযোগ, সেই সময় থেকেই বাবা-মাকে তার নেশার টাকা জোগাতে হয়েছে। সময় অসময় নেই, বাবা-মার উপরে চড়াও হয়ে টাকা আদায় করত কল্লোল। মারমুখী ছেলেকে না বলার সাধ্য ছিল না বৃদ্ধ দম্পতির। নেশার টাকা দিতে একে একে বিক্রি করতে হয়েছে ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে মূল্যবান সামগ্রী। একটা সময় নেশার কারণেই বাড়ি ছাড়ে কল্লোল। পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে অন্যত্র থাকতেও শুরু করে। কিন্তু নেশাই কাল, টাকার প্রয়োজনে স্ত্রীকেও মারধর শুরু করে কল্লোল। দিনের পর দিন অত্যাচারিত হওয়ার পর বাড়ি ছাড়েন কল্লোলের স্ত্রী। তিনি বাপের বাড়িতে চলে গেলে ফের বাবা-মায়ের উপরে অত্যাচার শুরু করে কল্লোল। শনিবার বাবা মাকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করে নিয়ে যায়। ফের রবিবার নেশার টাকা নিতে বাড়িতে আসে সে। এদিন আর টাকা দিতে রাজি হননি তরুণবাবু। অভিযোগ, না বলাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কল্লোল। বৃদ্ধ বাবাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে মারধর শুরু করে। তরুণবাবুকে মার খেতে দেখে বাঁচাতে ছুটে আসেন তাঁর স্ত্রী। মাকেও আঘাত করতে ছাড়েনি মাদকাসক্ত কল্লোল। বৃদ্ধ দম্পতির আর্তনাদে প্রতিবেশীরা চলে এলে পালিয়ে যায় কল্লোল।
[বাড়ির চিলেকোঠায় বালকের ঝুলন্ত দেহ, চাঞ্চল্য ছড়াল ডানকুনিতে]
এরপরই সিউড়ি থানায় ছেলের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত দম্পতি। তরুণবাবু বলেন, ‘ছেলের অত্যাচারে আজ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। পুলিশকে বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। এদিকে নেশা ছাড়াতে ছেলেকে রিহ্যাবেও ভরতি করেছিলাম। কোনও কাজ হল না। ফের টাকার জন্য অত্যাচার। এই অবস্থায় কোথায় যাব, ঘরবন্দি হয়ে আতঙ্কের প্রহর গুনছি। ’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.