অরূপ বসাক, মালবাজার: হাতির হানায় আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল স্কুলের একাধিক শ্রেণিকক্ষ! কার্যত ঝুঁকির মধ্যেই চলত ক্লাস। কিন্তু ফের একবার হাতির হানায় লণ্ডভণ্ড নাগরাকাটার বামনডাঙা চা বাগানের টন্ডু টিজি থ্রি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া এই স্কুল। জানা যায়, শুক্রবার গভীর রাতে দুটি হাতি ওই স্কুলে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালায়। এর ফলে স্কুলের অফিস ঘর, মিড ডে মিলের রান্নাঘর ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকী ভেঙে পড়েছে ক্লাসের একাধিক জানলাও। হাতির হানা থেকে রক্ষা পায়নি বিভিন্ন আসবাবপত্রও। স্থানীয়দের দাবি, এই নিয়ে গত তিন বছরে পঞ্চমবারের মতো এমন হামলার ঘটনা ঘটল। এই অবস্থায় আগামিদিনে কীভাবে ক্লাস চলবে তা নিয়ে চিন্তায় শিক্ষকরা। অবিলম্বে এই বিষয়ে প্রশাসনিক সাহায্যের দাবি উঠছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিত ওড়াও বলেন, ”মাঝে মধ্যেই গরুমারা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ে হাতি। তেমনই শুক্রবার রাতেও দুটি হাতি বেরিয়ে পড়ে এবং বিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।” স্থানীয় ওই বাসিন্দার কথায়, হাতির হামলায় আগেই শ্রেণিকক্ষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। এবার ক্ষতি হয়েছে অফিস ঘর। রক্ষা পায়নি মিড ডে মিলের রান্নাঘরও। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ, যিনি নিজেও বামনডাঙা চা বাগানের বাসিন্দা, জানিয়েছেন, “সব কটি শ্রেণিকক্ষ হাতির হামলায় আগে থেকেই ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ছিল। একেবারে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস চলছিল। এবার অফিস ও রান্নাঘরও ভেঙে গেল।” এই অবস্থায় অবিলম্বে প্রশাসনিক সহযোগিতা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ।
বর্তমানে স্কুল বন্ধ রয়েছে। পুজোর ছুটি চলছে। যেভাবে স্কুলটি ক্ষতি হয়েছে তাতে ছুটি শেষে কীভাবে পঠনপাঠন চলবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্কুলের অন্যান্য স্কুল শিক্ষকরাও। শুধু পঠনপাঠন নয়, কীভাবে স্কুলের অন্যান্য কাজ চালানো সম্ভব তা নিয়েও বেড়েছে চিন্তা। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে অভিভাবকরাও। বারবার হাতির হানায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় দেখতে এসে তাঁরা নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
খুনিয়া বনদপ্তরের রেঞ্জার সজল কুমার দে জানিয়েছেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” শিক্ষা এবং পরিবেশ, দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে এই সংঘাতের স্থায়ী সমাধান খোঁজার দাবি তুলছেন অভিভাবক ও সমাজকর্মীরা। না হলে একদিকে যেমন বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, তেমনি বিপন্ন হবে এলাকার শিশুদের শিক্ষার অধিকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.