Advertisement
Advertisement
Durga Puja Carnival

করোনা কালে ৩০০ বছরের প্রথায় ছেদ, দুর্গাপুরে কার্নিভাল বাদেই এবার প্রতিমা বিসর্জন

তৎকালীন জমিদার বাবু চন্দ্রনারায়ণের উৎসাহে যৌথ শোভাযাত্রা করে বিসর্জন হতো।

For the first time in 300years no carnival at Durga immersion due to corona situation| Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 27, 2020 4:59 pm
  • Updated:October 27, 2020 5:02 pm   

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: করোনার কামড়ে এবার ফিকে পুজোর ‘কার্নিভাল’। সরকারি বিধি মেনে ভিড় নেই, ফাঁকায় ফাঁকায় সাঙ্গ হল দুর্গাপুরের (Durgapur) গৌরবাজারের পুজোগুলির প্রতিমা বিসর্জন। মঙ্গলবার, একাদশীর দুপুরে নয়, ভিড় এড়াতে সকাল থেকেই ‘ঠাকুর ঘুরোর ডাঙা’য় প্রতিমা নিয়ে হাজির হন উদ্যোক্তারা। বেশ কয়েকটি প্রতিমা এবার সেখানে আসেইনি। এরপর এলাকাতেই বিসর্জন দেওয়া হয়। বিকালের আগেই শেষ বিদায় পর্ব।

Advertisement

Durga-puja-carnival

দুর্গাপুরের গৌরবাজারে এই বিসর্জন ‘কার্নিভাল’-এর ((Durga Puja Carnival) ঐতিহ্য কিন্তু বহু প্রাচীন। অন্তত ৩০০ বছরের পুরনো এই প্রথা। দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকে গৌরবাজারের জমিদার বাবু চন্দ্রনারায়ণের উদ্যোগে স্থানীয় পুজোগুলিকে নিয়ে বিসর্জনের প্রথা শুরু হয়। তখন আজকের মতো ‘কার্নিভাল’ শব্দ চালু হয়নি। তবে ধরন ছিল খানিকটা তেমনই। গৌরবাজারের ‘ঠাকুর ঘুরোর ডাঙা’য় প্রতি বছর নিয়ম করে এই গ্রামীণ উৎসব চলত।

[আরও পড়ুন: হাজার চেষ্টা করেও বিসর্জন দেওয়া যায়নি এই দুর্গা প্রতিমা, কেন জানেন?]

গৌরবাজারের ১১ টি, মাধাইপুরের ১ টি, চন্দরডাঙার ১টি ও কাঁকসার বিদবিহারের শ্রীরামপুর মানার রিফিউজি পাড়ার ১ টি প্রতিমা কার্নিভালে অংশ নেয়। একসঙ্গে চলে শোভাযাত্রা। বিসর্জনকে উৎসবের চেহারা দিতে এলাকায় মেলা বসে। দুপুর থেকেই আশপাশের হাজার সাতেক মানুষ জড়ো হন কার্নিভালে অংশ নিতে। একে একে প্রতিমা আসার পর ডাঙা ঘিরে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। তারপর থেকেই ওই জায়গার নাম দেওয়া হয় ‘ঠাকুর ঘুরোর ডাঙা’। এখানে প্রতিমা নিয়ে প্রদক্ষিণের সময় বাজতে থাকে ঢাক, ঢোল, কাঁসর। ফাটতে থাকে দেদার আতসবাজি। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ‘মাঝি নৃত্য’ অন্যতম আকর্ষণ এই কার্নিভালের। ঘন্টা দুয়েক ধরে এভাবে প্রদক্ষিণের পর প্রতিমা নিয়ে যে যার নিজের এলাকায় বিসর্জন দেয়। এখন পঞ্চায়েতের উদ্যোগে গঠিত ‘গৌরবাজার দুর্গাপুজো শান্তি কমিটি’ এই কার্নিভালের তত্ত্বাবধানে থাকে।

[আরও পড়ুন: নৌকাডুবিতে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস, মুর্শিদাবাদে বিসর্জনে জারি নয়া নিয়ম]

তবে এবার করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতিতে গায়েব হয়েছে সেই কার্নিভালের জৌলুস। বসেনি মেলা। নেই আদিবাসীদের নাচ-গান, জনসমাগম। এবছর প্রত্যেক ঠাকুর এককভাবে এসে প্রদক্ষিণ করে বিসর্জনের জন্য ঘাটে চলে গিয়েছে। অন্য বছরের মতো একসঙ্গে সব প্রতিমা ঘোরানো হয়নি। ‘গৌরবাজার দুর্গাপুজো শান্তি কমিটি’র সদস্য আর্যকুমার পাণ্ডে জানান, “জৌলুস কমলেও বন্ধ হয়নি চিরাচরিত প্রথা। কার্নিভালের জন্য এলাকার মানুষ অপেক্ষা করে থাকেন বছরভর। তবে এই বছর করোনার প্রভাবে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল কমিটির পক্ষ থেকেই। আশা করা যায় পরের বছর ফের পূর্ণ উদ্যমেই হবে কার্নিভাল।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ