বাবুল হক, মালদহ: জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে মালদহে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্ত-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতরা কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মাইনুল শেখ, তাঁর ভাই সাইদুল শেখ এবং দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইমারত শেখ ও শহিদ শেখ। ধৃতদের সকলের বাড়ি লক্ষ্মীপুর এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত ও নিহত তৃণমূল নেতা একসঙ্গে ব্যবসা করতেন। সেই বিবাদের জেরেই কি খুন নাকি এর নেপথ্যে প্রেমঘটিত কোনও জটিলতা রয়েছে কিনা, খুনের কিনারা করতে সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
বৃহস্পতিবার রাতে মালদহ শহরের অদূরে ইংলিশবাজারের লক্ষ্মীপুরে ঘরে আটকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় তৃণমূল কর্মী তথা জমি ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদকে। নিহতের বাড়িও মালদহের মানিকচকের গোপালপুর এলাকায়। ওই রাতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী শিউলি খাতুন-সহ কয়েকজন এক জন্মদিনের পার্টিতে যোগ নিতে ইংলিশবাজার থানার লক্ষ্মীপুর এলাকায় যান। সেখানেই তাঁকে ঘরে আটকে মাইনুল শেখের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মিলে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় মৃত আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী-সহ তিনজন গুরুতর আহত হন। তাঁরা বর্তমানে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, আজাদ এবং মাইনুল একসঙ্গেই জমির ব্যবসা করতেন। জমিজমার ব্যবসা নিয়ে বিবাদ ছিল দু’জনের। সেই বিবাদের জেরেই এই খুন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
দুই পরিবারের মধ্যে প্রেমঘটিত কোনও বিবাদ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মাইনুল শেখ লক্ষ্মীপুর এলাকায় ‘জমি মাফিয়া’ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। জলাজমি কিনে নিয়ে তা ভরাট করে বিক্রি করাটাই ছিল তাঁর মূল পেশা। তাঁর নেতৃত্বে এলাকায় বেআইনিভাবে এখনও একাধিক জলাশয় ভরাট করার কাজ চলছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। একসময় ইংলিশবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন মাইনুল। পরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের টিকিট নিয়ে জয়লাভ করেন। তারপর ফের তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন।
অভিযোগ, জোর করে জমিদখল, জাল সার্টিফিকেট, জাল দলিল বানিয়ে জমি দখলের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগও রয়েছে মাইনুলের বিরুদ্ধে। তাঁর ব্যবসায়িক সঙ্গী ছিলেন নিহত আবুল কালাম আজাদ, তা জানিয়েছে পুলিশ। এই খুনের ঘটনায় ধৃত চারজনকে শনিবার মালদহ আদালতে পেশ করে ইংলিশবাজার থানার পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে চারজনকেই পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.