সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নামে নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করাই শুধু নয়। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে সাধারণ মানুষের কাছে অর্থের আবেদন জানানো হত! পুলিশ আধিকারিকের অ্যাকাউন্ট ভেবে মানুষজন সন্দেহ করত না। আর তারপরই প্রতারণার ফাঁদে ফেলার চেষ্টা হত। ফাঁদে পড়ে অর্থ খুইয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। নড়েচড়ে বসে পুলিশ। দুই ভিনরাজ্য থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দুই যুবককে। সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে সমাজমাধ্যমে কারোর পাঠানো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করবেন না। বড়সড় কোনও চক্রের ফাঁদে পড়তে পারেন। এমনই আবেদন ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুন কুমার দে-র নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। একটা-দুটো নয়, মোট সাতটি নকল অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। সেগুলির থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাত প্রতারকরা। গত এক মাসে এইসব অ্যাকাউন্ট থেকে সাধারণ মানুষদের কাছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট যেত। পুলিশ সুপারের ছবি থাকত সেসব অ্যাকাউন্টে। ফলে সাধারণ মানুষজন বিশ্বাস করে ফেলতেন। শুরু হত মেসেজে কথাবার্তা। এরপরই সুযোগ বুঝে তাঁদের কাছে টাকা চাওয়া হত। অনেকে সেই ফাঁদে পা-ও দিয়েছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) মিতুনকুমার দে জানান, তাঁর নামে এমনই একটার পর একটা নকল অ্যাকাউন্ট খোলে প্রতারকরা। যতবারই সেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হত, প্রতারকরা নতুন করে ফের নকল অ্যাকাউন্ট খুলত। প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়েছিলেন বজবজের সারেঙ্গাবাদের বাসিন্দা সাবির আলি। তিনি সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান। তদন্তে নামে জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও সাইবার ক্রাইম থানা। আরও একাধিক ঘটনার কথা জানা যায়।
এরপর পুলিশ দু’জনের সন্ধান পায়। হরিয়ানার মেওয়াট থেকে ২২ বছরের আকিল ও রাজস্থানের আলওয়ার থেকে বছর কুড়ির আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্যে নিয়ে আসা হয় ধৃতদের। আদালতের নির্দেশে দু’জনকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রে আরও কেউ জড়িত কিনা খোঁজ চলছে। কত টাকার প্রতারণা হয়েছে? কতজন তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন? সেসব জানার চেষ্টা চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.