অলংকরণ: অরিত্র দেব।
অর্ণব দাস, বারাসত: সোশাল মিডিয়ায় আলাপ, দিন সাতেকের মধ্যে প্রেম। প্রেমের টানে পুজোয় প্রেমিকের সঙ্গে সময় কাটাতে বর্ধমানের কালনার বাড়ি থেকে প্রেমিকা হাজির হয়েছিলেন হাবড়ায়, প্রেমিকের বাড়িতে। প্রেমিক দীপজ্যোতি চক্রবর্তী পেশায় সেনা জওয়ান। হাবড়ার হিজলপুকুরের ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সোমবার, সপ্তমীর দিন বছর কুড়ির প্রেমিকা স্টিলা কয়াল আসার পর সপ্তমী ও অষ্টমীর রাতে বাইক চড়ে ঠাকুর দেখেছিলেন তাঁরা। নবমীর রাতেও বেরিয়েছিল যুগল। রাতভর ঠাকুর দেখে প্রেমিকের বাড়ি ফেরার পথেই করুণ পরিণতি। বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রেমিকা স্টিলার।
জানা গিয়েছে, অশোকনগরের পাঁচ নম্বর মোড়ের যশোর রোডে একটি গাড্ডায় পড়ে গিয়েছিল দীপজ্যোতির বাইক। রাস্তায় ছিটকে পড়েন প্রেমিকা স্টিলা। ঠিক তখনই পিছনের দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তাঁর। প্রথমে মৃতার নাম, পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। পরবর্তীতে তদন্তে নেমে বিস্তারিত জেনেছেন তদন্তকারীরা। তবে এই দুর্ঘটনা নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের এখনও দায়ের হয়নি। তা সত্ত্বেও গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার প্রেমিককে দীপজ্যোতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে অশোকনগর থানার পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বাইশের দীপজ্যোতি ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্পে কনেস্টবল পদে চাকরি করছেন তিন বছর হল। তাঁর পোস্টিং অসমে। মাত্র ১৭ দিনের পরিচয়ে স্টিলার সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ফোনে দু’জনের নিয়মিত কথাও হত। পুজোর ছুটিতে হাবড়ার বাড়িতে চলে এসেছিল দীপজ্যোতি। এবছর তাঁর সঙ্গে ঠাকুর দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল প্রেমিকা। তারপরই সপ্তমীতে বর্ধমান থেকে হাবড়ায় আসে স্টিলা কয়াল। কিন্তু দশমীর ভোরে তাঁর মর্মান্তিক পরিণতির পর থেকে খোঁজ মিলছিল না সেনা জওয়ান প্রেমিকের।
পরে জানা যায়, সে হাসনাবাদে জ্যাঠার বাড়িতে চলে গিয়েছে। প্রেমিকের পালিয়ে যাওযার বিষয়টি জানার পরেই দীপজ্যোতিকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। প্রেমিকের পরিবারের অবশ্য দাবি, আচমকা এই ঘটনায় কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে দীপজ্যোতি প্রথমে বাড়িতে গিয়ে মাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। এরপর প্রেমিকার দেহ রাস্তার এনে অ্যাম্বুল্যান্সও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্সের চালক যেতে রাজি হননি। দীপজ্যোতির জ্যাঠা মুক্তি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “ভাইপো আমার বাড়িতে গিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানিয়েছে। ওর বয়স কম। তাই ঘাবড়ে গিয়ে পালিয়ে আমার বাড়িতে চলে এসেছিল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.