কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: চাকরি জীবনের একদম শেষের দিকে পৌঁছে গিয়েছিলেন গঙ্গেশ্বর মাল। আগামিকাল বুধবার থেকেই শুরু হওয়ার কথা ছিল তাঁর অবসর জীবন। ভারতীয় রেলের মালগাড়ির চালক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করেছেন দক্ষ হাতে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তিনি পণ্য পৌঁছে দিয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে মালগাড়ি নিয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলার ফরাক্কায় ফিরছিলেন তিনি। সেসময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ। বছর ৬৫-এর গঙ্গেশ্বর মাল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।
ঝাড়খণ্ডে দুই মালগাড়ির মুখোমুখি ধাক্কায় প্রাণ গিয়েছে দু’জনের। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ গোড্ডা জেলা লালমাটি এলাকা থেকে একটি কয়লা বোঝাই মালগাড়ি ফরাক্কা এনটিপিসির উদ্দেশ্যে আসছিল। ঝাড়খণ্ডের বারহাইট এলাকায় লুপলাইনে দাঁড়িয়েছিল একটি খালি মালগাড়ি। দুটি গাড়ির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় আগুনও ধরে যায়। আগুনে পুড়ে মারা যান দুটি গাড়িরই চালক অম্বুজ মাহাতো এবং গঙ্গেশ্বর মাল। মৃত গঙ্গেশ্বর মাল জিয়াগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।
ঝাড়খণ্ডে মালগাড়ি দুর্ঘটনার খবর কানে গিয়েছিল গঙ্গেশ্বর মালের বাড়ির লোকজনদের কাছে। তখন থেকেই মনের মধ্যে কু গাইতে শুরু করে পরিবারের সদস্যদের। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টাও হলেও পাওয়া যায়নি। সকালে গঙ্গেশ্বর মালের মৃত্যুসংবাদ জিয়াগঞ্জের বাড়িতে আসে। তাঁর পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা। কান্নার রোল ওঠে বাড়িতে। প্রতিবেশীদের কাছেও সেই দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। সকলেই ভিড় করতে শুরু করেন ওই বাড়িতে। আত্মীয়রাও একে একে এসে পৌঁছন ওই বাড়িতে। পরিবারের সদস্যরা ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ঝাড়খণ্ডেই দুই চালকের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে। তারপরই ওই মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ৬৫ বছর বয়স হয়েছিল গঙ্গেশ্বর মালের। চাকরির শেষ দিকে চলে এসেছিলেন তিনি। মৃত্যুর কথা শুনে ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী ও কন্যা। বাঁধ মানছে না চোখের জল। গঙ্গেশ্বর মাল হাসিখুশি মানুষ ছিলেন বলেই জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ওই এলাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.