শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ঠাকুরদালানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে খড়, কাদার তাল। জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির সদস্যদের এখন যেন নাওয়া খাওয়ার ফুরসত নেই। কারণ, উমাবরণের প্রস্তুতি যে তুঙ্গে। এই পুজো ঘিরে নানা কিংবদন্তি প্রচলিত। যা আজও লোকের মুখে মুখে ফেরে।
বৈকুণ্ঠপুরের রাজবাড়ির পুজোর (Gram Banglar Durga Puja) বয়স ৫১৬ বছর। সপ্তমীর রাত বা অষ্টমী তিথির শুরুতে এই বাড়িতে শুরু হয় ‘অর্ধরাত্রির পুজো’। সপ্তমীর পুজো শেষে মাঝরাতে রাজবাড়ির ঠাকুর দালানে ফের বেজে ওঠে কাঁসর-ঘণ্টা-শাঁখ। শুরু হয় পুজো। রীতি বড়ই কঠিন। পুজোয় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে শর্ত। রাজ পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কেউ এই পুজোয় যোগ দিতে পারেন না। কেন এই নিয়ম জলপাইগুড়ি বৈকন্ঠপুর রাজবাড়ির পুজোয়?
কথিত আছে, একসময় নরবলি দেওয়া হত এই পুজোয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম বদলেছে। এখন আর রক্ত মাংসের মানুষকে বলি দেওয়া হয় না। পরিবর্তে চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি হয় নর। কুশ দিয়ে বলি দেওয়া হয় সেই ‘নর’কে। এ প্রসঙ্গে রাজ পরিবারের কুল পুরোহিত শিবু ঘোষাল বলেন, “বাবা-দাদুদের কাছে শুনে এসেছি, মাঝরাতের পুজোয় এখানে নরবলি দেওয়া হত। ৯টি পায়রাও বলি দেওয়া হত। এখন সেই রীতি না থাকলেও চালের গুঁড়ো তৈরি করে নর তৈরি করে কুশ দিয়ে বলি দেওয়া হয়। কিন্তু পুজোয় রাজ পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত থাকতে পারেন না।”
স্থানীয়রাও সারাবছর এই পুজোর অপেক্ষায় থাকেন। তিনি বলেন, “এটা শুধু রাজবাড়ির পুজা নয়। জলপাইগুড়ির গর্ব।” তাই পুজো প্রস্তুতির সঙ্গে যেন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে তাঁরা। না হলে যে উৎসবই অসম্পূর্ণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.