Advertisement
Advertisement
Haryana

পকেট গড়ের মাঠ, তবু দেশ বেড়াচ্ছেন হরিয়ানার হর্ষ

বার্তা একটাই, 'ভারতীয় সংস্কৃতিকে রক্ষা করুন, প্রকৃতিকে রক্ষা করে প্রকৃতির সঙ্গে বাঁচতে শিখুন।'

Haryana man spread environment awareness despite no money

সনাতনী হর্ষষ ছবি: জয়ন্ত দাস।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:December 17, 2024 4:23 pm
  • Updated:December 17, 2024 4:23 pm   

ধীমান রায়, কাটোয়া: বাড়ি থেকে কপর্দকহীন হয়ে বেরিয়ে ছিলেন। ১২ রাজ্য ঘুরছেন,অথচ কারও কাছে হাত পাতেননি। ১০০০ দিন ধরে দেশভ্রমণের লক্ষ্য নিয়েছেন হরিয়ানার ২৪ বছরের তরুণ সনাতনী হর্ষ। তাঁর বার্তা একটাই, “ভারতীয় সংস্কৃতিকে রক্ষা করুন, প্রকৃতিকে রক্ষা করে প্রকৃতির সঙ্গে বাঁচতে শিখুন।”

Advertisement

দেশভ্রমণের ৪৭৮ তম দিবসে এদিন সোমবার সনাতনী হর্ষকে দেখা যায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের আশ্রমে। রবিবার আশ্রমে রাত কাটানোর পর আবার তিনি রওনা দেন কাটোয়ার দিকে। জানা যায়, হরিয়ানা রাজ্যের কারনাল এলাকায় বাড়ি সনাতনী হর্ষের। বাবা ২০১১ সালে মারা গিয়েছেন। বাড়িতে রয়েছেন মা, দাদা-সহ আত্মীয় পরিজন। হর্ষ স্নাতক উত্তীর্ণ হয়ে চাকরির খোঁজ করেননি। পরিবার ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন ভারতভূমির আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক পরম্পরার টানে। সুঠাম চেহারা, সুদর্শন এই যুবকের পোশাক কিছুটা সাধুসন্তদের মতনই। মুখে দাড়ি।

 

সনাতনী হর্ষষ ছবি: জয়ন্ত দাস।

 

সনাতনী হর্ষ বলেন, “গর্ভধারিনী মায়ের অনুমতি নিয়ে এবং ভারতমাতার আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে দেশভ্রমণের উদ্দেশে বেরিয়েছি। ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট হরিয়ানা থেকে এই যাত্রা শুরু করেছি। হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, পাঞ্জাব, ওড়িশা হয়ে পশ্চিমবঙ্গে এসেছি। এরপর গন্তব্য অসম হয়ে উত্তর ভারত।” পোশাক, বিছানা নিয়ে সঙ্গে রয়েছে ৩০ কেজি ওজনের লাগেজ।

সনাতনী হর্ষ জানিয়েছেন, এই ৪৭৮ দিন বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরলেও এই যাত্রার মধ্যে ট্রেন বা বাসে চড়েননি। অধিকাংশ রাস্তা পদব্রজেই ঘুরছেন। কখনও রাস্তায় দিয়ে অন্য গাড়ি দেখলে তাঁদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। হর্ষ নিরামিষাশী। কখনও কেউ খেতে বললে খান। না পেলে জলপান করেই কাটিয়ে দেন। এই যাত্রাপথে সাধারণত রাত্রিবাস করছেন আশ্রম বা মাঠে। সাধুসঙ্গ করছেন। আর প্রত্যেকদিনের অভিজ্ঞতা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সংস্কৃতি লিপিবদ্ধ করে রাখছেন। এই অভিজ্ঞতা থেকেই ভবিষ্যতে একটি বই লিখতে চান সনাতনী হর্ষ। পাশাপাশি যেখানেই যাচ্ছেন বৃক্ষরোপণ এবং গাছ লাগানোর আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি। যেখানেই পারছেন নিজের হাতেও বৃক্ষচারাও রোপন করছেন।

সনাতনী হর্ষর কথায়, “এই পৃথিবীর বুকে আমরা সবাই ভাড়াটিয়া হিসাবে এসেছি। কিন্তু নিজেদেরকে মালিক ভাবি। ঈশ্বর ইচ্ছা করলেই কখন যে আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে কেউ জানি না। প্রকৃতি এই পৃথিবীটা সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছে। আমাদের সবার উচিত আরও সুন্দর করে তোলা, নষ্ট করা নয়। তাই আমাদের উচিত প্রকৃতির সঙ্গে বাঁচা – দেশের সংস্কৃতিকে রক্ষা করা।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ