Advertisement
Advertisement
Midnapore

বাংলার ইতিহাস সংরক্ষণ, মিউজিয়ামে স্থান পাবে মেদিনীপুরের শিরোমণি গড়ে উদ্ধার পৌরাণিক পদচিহ্ন!

জেলাশাসক বলেন, 'পাথুরে পদযুগলকে সংরক্ষণের কথা জানানো হয়েছে।'

Historic footprints recovered from Shiromoni Garh Midnapore may find place in museum

কর্ণগড়ে উদ্ধার হওয়া পদচিহ্ন।

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:August 17, 2025 5:45 pm
  • Updated:August 17, 2025 5:45 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রানি শিরোমণি গড়ে ঝোপ জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছিল পাথর কেটে খোদাই করা পদচিহ্ন। পদচিহ্নটি কার তা এখনও স্পষ্ট হলেও, এলাকার ইতিহাস প্রিয় মানুষদের আবেদন শুনে সেই পদচিহ্ন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছে প্রশাসন।

Advertisement

রাজ্যের পর্যটন তালিকায় স্থান পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি গড়। রানি শিরোমণি ও চুয়াড় বিদ্রোহ খ্যাত এই অঞ্চলের দুটি প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ অধিগ্রহণ করেছে রাজ্যের পুরাতত্ত্ব বিভাগ। সম্প্রতি ওই অঞ্চল থেকে উদ্ধার হয়েছিল এই ঐতিহাসিক স্মারক। ধাপে ধাপে খোদাই করা ত্রিস্তরীয় পাথরের একদম উপরিভাগে রয়েছে পদচিহ্নটি। নিচে যেন বেদি‌। ‘হেরিটেজ জার্নি’, ‘ভালবাসি কর্ণগড়’ ও ‘রানি শিরোমণি ঐক্য মঞ্চ’ সংগঠন- এর আহ্বায়ক ওই প্রাচীন পদচিহ্নটি দেখেই বুঝতে পেরেছিল তার ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। আবেদন জানিয়েছিল জেলা প্রশাসনের কাছে। তার পরে জেলাশাসকের উদ্যোগে এই বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল অতিরিক্ত জেলা শাসক ও শালবনীর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জেলাশাসকের দফতরের পক্ষ থেকে তা পাঠানো হয়েছে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অন্তর্গত পুরাতত্ত্ব বিভাগে।

জেলাশাসক খুরশিদ আলি নির্দেশ দিয়েছিলেন, ঐতিহাসিক মূল্যসম্পন্ন ওই পদচিহ্ন সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার জন্য। তার পরে বিস্তারিত যাচাই করে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের পুরাতত্ত্ব বিভাগে। আবেদন জানিয়েছেন, রাজ্যের প্রত্নতত্ত্ব মিউজিয়ামে এটিকে স্থান দেওয়ার জন্য। পদচিহ্নটি কার তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে এই অঞ্চলে রানি শিরোমণির সেনোটাফ ছিল বলে জানিয়েছিলেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অন্নপূর্ণা চট্টোপাধ্যায়। কর্ণগড়- শিরোমণি অঞ্চলেই ছিল রাজা যশোবন্ত সিংহের সমাধি। এছাড়াও, পদচিহ্নটি হতে পারে বৌদ্ধ, ধর্মঠাকুর বা বিষ্ণু বা জৈন সম্পর্কিত। মেদিনীপুর মানেই উঠে আসে মঙ্গলকাব্য প্রসঙ্গ। তাই বৌদ্ধ প্রভাব বা ধর্ম ঠাকুর সম্পর্কিত তথ্য উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ধর্মীয় আচারে এই ধরনের পদচিহ্নের কথা উল্লেখ আছে। তাছাড়াও থাকছে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মূল্য।

প্রত্নতত্ত্ববিদ প্রকাশ মাইতি মনে করছেন, পদচিহ্নটি সম্ভবত কোনও দ্বারপালের। ‘দ্বারপাল’ বলতে বোঝায় মন্দিরের রক্ষক। হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মে দ্বারপালের উল্লেখ রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ববিদ দিলীপ দত্ত গুপ্ত অবশ্য মনে করছেন, এই পদচিহ্ন কোনও স্তম্ভের নিচের দিক। উল্লেখ্য, অতীতে মন্দিরের নীচের দিকেও বিভিন্ন ধরনের শৈল্পিক স্থাপত্য লক্ষ্য করা যেত। জেলাশাসক বলেন, “পাথুরে পদযুগলকে সংরক্ষণের কথা জানানো হয়েছে।”

‘ভালোবাসি কর্ণগড়’, ‘হেরিটেজ জার্নি’ ও ‘রানি শিরোমণি ঐক্য মঞ্চ’- এর আহ্বায়ক নিসর্গ নির্যাস মাহাতো জানিয়েছেন, অভ্যাস মতো নিয়মিত গড় পরিদর্শনের সময় তিনি এই পদচিহ্নটি দেখতে পেয়েছিলেন। তারপরেই দরবার করেছিলেন জেলা প্রশাসনের কাছে। প্রশাসনের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসনের এই পদক্ষেপে আমরা খুশি। সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জেলাশাসক ও জেলাশাসকের দফতরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক, মহকুমা শাসক ও জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিককে।” সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের মিউজিয়ামে স্থান না পেলেও তা যেন সংরক্ষণ করা হয় জেলার মিউজিয়ামে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ