সুমন করাতি, হুগলি: সঙ্গে ছিল পাসপোর্ট, আধার, প্যান, ভোটার কার্ড-সহ একাধিক পরিচয়পত্র। তা সত্ত্বেও ওড়িশায় কাজে গিয়ে চরম হেনস্তার শিকার হুগলির দেবাশিস দাস। অবশেষে শনিবার বাড়ি ফিরলেন তিনি। এখন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা ভুলতে পারছেন না তিনি। ক্ষোভে ফুঁসছে তাঁর পরিবারও।
হুগলির চুঁচুড়া ২ নং রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা দেবাশিস দাস। বিভিন্ন প্রজেক্টে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কাজ করেন। গত ১৪ জুন এক সংস্থার হয়ে ওড়িশায় কাজে গিয়েছিলেন দেবাশিস। সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন। অভিযোগ, ওড়িশার স্থানীয় পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের হেনস্তা করে। তাঁদের কাজের জায়গা থেকে অন্যত্র তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের কাছে থাকা নানা পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। দেবাশিসের কাছে পাসপোর্ট, আধার,প্যান,ভোটার কার্ড ছিল। এছাড়া জন্মের শংসাপত্র-সহ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট ছিল। সেগুলি দেখান তিনি। তবে তাতেও লাভ হয়নি কিছুই। মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। সে কারণে পরিবার কিংবা ওই সংস্থার ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি দেবাশিস। অবশেষে পাসপোর্ট দেখিয়ে মুক্তি পান। শনিবার বাড়ি ফেরেন দেবাশিস। তিনি বলেন, “দেশের ১৪টা রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে কাজে গিয়েছি। এমন পরিস্থিতির শিকার হইনি। এখন বাইরে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছি। আবার ভাবছি কাজে না গেলে চলবে কীভাবে?”
ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠায় দিন কাটে দেবাশিসের পরিবারের। মা বিভা দাস বলেন, “মনে হচ্ছিল আমার ছেলেটাকে আর পাবো না। কোনও দিশা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। যখন ফোন করল তখন যেন প্রাণ ফিরে পেলাম।” উৎকণ্ঠা ভরা গলায় তিনি আরও বলেন, “কোন ভরসায় বাইরে ছাড়ব ছেলেকে? আজকে যদি এমন পরিস্থিতি হয় তাহলে বাংলার মানুষ কোনও কাজই করতে পারবে না। সমস্ত প্রমাণপত্র থাকার পরেও কী করে এসব হয়? এটা নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত। আজকে আমার ছেলের সঙ্গে হয়েছে, কাল অন্যদের সঙ্গেও হবে। এভাবে চলতে পারেনা। কই আমাদের এখানে তো এমন হচ্ছে না। এরকম সমস্যা হলে সাধারণ মানুষ কী করবে?” তবে বর্তমানে দেবাশিসের বাড়িতে যেন উৎসবের আমেজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.