Advertisement
Advertisement
Howrah

হাওড়ায় রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া, দু’সপ্তাহ দাদার পচাগলা দেহ আগলে ভাই!

মা-বাবা মারা যাওয়ার পর দুই ভাইয়ের কেউই প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন না।

Howrah brother live 2 weeks with dead brother

নিজস্ব ছবি

Published by: Anustup Roy Barman
  • Posted:October 8, 2025 7:10 pm
  • Updated:October 8, 2025 9:05 pm   

অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: ফের রবিনসন স্ট্রিট কান্ডের ছায়া হাওড়ায়। আবাসনের ঘরে দাদার পচাগলা মৃতদেহ আগলে বসে মানসিকভাবে অসুস্থ ভাই। মৃত্যুর প্রায় দু’সপ্তাহ পরে, বুধবার দুপুরে এলাকায় তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশী এবং আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে রাজকুমার গুপ্তা নামে বছর ৫০-এর ওই ব্যক্তির পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জি টি রোডের কাছে সন্ধ্যা বাজারে। ওই আবাসনের চারতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় হাওড়া থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অসুস্থতা থেকেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির।

Advertisement

এদিন দুপুরে ওই আবাসনের ঘরের দরজা ভেঙে পুলিশ যখন ঢোকে তখন রাজকুমারের পচাগলা দেহ পড়েছিলো খাটের উপর। দেহাংশ খুবলে খেয়েছে পোকা। আর সেই দেহ আগলে দাঁড়িয়েছিলো রাজকুমারের ভাই কিষান কানহাইয়া গুপ্তা। তদন্তে পুলিশের অনুমান, রাজকুমারের ভাই মানসিকভাবে অসুস্থ। সেই কারণেই তিনি দাদার মৃত্যুর খবর কাউকে দিতে পারেননি।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এদিন সকালে রাজকুমার গুপ্তার এক আত্মীয় তাঁদের ফ্ল্যাটে আসেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করে কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় প্রতিবেশীদের ডেকে আনেন তিনি। এরপর কিষান কানাহাইয়া ফ্ল্যাটের দরজা খুলতেই ভেতর থেকে দুর্গন্ধ ভেসে আসে। খবর দেওয়া হয় হাওড়া থানায়।

প্রসঙ্গত, সন্ধ্যা বাজারের ১০৩ নম্বর জিটি রোড (সাউথ)-এর ওই পুরোনো আবাসনের চারতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন রাজকুমার গুপ্তা ও তার ভাই কিষান কানহাইয়া গুপ্তা। রাজকুমারবাবু টিউশন পড়াতেন। তবে গত কয়েকমাস ধরে তাঁর কাছে স্কুল পড়ুয়ারা আর টিউশন পড়তে আসতো না। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ছিলেন তিনি। মল্লিকফটকের কাছে তাঁদের অন্যান্য আত্মীয়রা থাকলেও বাড়িতে কেউই নিয়মিত যাতায়াত করতেন না। মহালয়ার আগে শেষবার রাজকুমারবাবুকে বাড়ির সামনে দেখতে পেয়েছিলেন প্রতিবেশীরা।

যদিও পুজোর সময় ভাই কিষান কানহাইয়াকে জল নিতে এবং খাবার কিনতে প্রায়ই বাইরে বেরোতে দেখেছেন প্রতিবেশীরা। মৃত দাদার পাশে বসে নিয়মিত খাবার খেয়েছেন ভাই। প্রতিবেশীরা আরও জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে তাঁরা এই ফ্ল্যাটে রয়েছেন। মা-বাবা মারা যাওয়ার পর দুই ভাইয়ের কেউই প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন না। দু’জনেই বিয়ে করেননি। কারও সঙ্গে সেভাবে মেলামেশা করতেন না দুই ভাই। ফলে, রাজকুমারবাবু অসুস্থ হলেও কেউই তা টের পাননি।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ