শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: আরবের শারজা বন্দরে দেড় বছর ধরে জাহাজে আটকে পড়ে রয়েছেন ঘাটালের এক বাসিন্দা। ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনার ডিঙ্গাল গ্রামের বাসিন্দা যাজ্ঞিক মুখোপাধ্যায় এমটি আবদুল রজাক নামে এক জাহাজের ক্যাপ্টেন প্রায় দেড় বছর ধরে আটকে রয়েছেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেও কোনওমতেই বাড়ি ফিরতে পারছেন না যাজ্ঞিকবাবু। ভারতীয় দূতাবাস থেকে শুরু করে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গেও যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁর পরিবার। ফলে চরম উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবার। যাগ্নিকবাবুর স্ত্রী ছন্দা মুখোপাধ্যায় বলেন, “ আমরা খুব উদ্বিগ্নের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছি। ভারতীয় দূতাবাস , বিদেশ দফতর ও ওই জাহাজ কোম্পানির সদর দপ্তরেও আমরা যোগাযোগ করেছি। তাঁরা শুধুই আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কিছুই করেনি। আমরা খুব চিন্তায় রয়েছি।’’
২০১৭ সালের পাঁচ আগস্ট যাগ্নিক মুখোপাধ্যায় এমটি আবদুল রজাক নামে এক পণ্যবাহী জাহাজের ক্যাপ্টেন হিসাবে যোগদান করেন। যাগ্নিকবাবুর মতো ৩১ জন ভারতীয় কয়েকটি পণ্যবাহী জাহাজে একই সঙ্গে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁরা সবাই আরব দেশের উপকূলে জাহাজে আটকে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা সবাই এখন শারজা বন্দরে রয়েছেন বলে যাজ্ঞিকবাবুর পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে। যাজ্ঞিকবাবু মাত্র আট মাসের চুক্তিতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। মাত্র দুই মাসের বেতন দিতে পেরেছে কোম্পানি। তারপর থেকে আর তাঁর বেতন কোম্পানি দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন যাজ্ঞিকবাবুর স্ত্রী ছন্দা মুখোপাধ্যায়। যাজ্ঞিকবাবুর হাতে টাকা পয়সা নেই। ফলে নিয়মিত খাবার জুটছে না যাজ্ঞিকবাবুদের। প্রায় অভুক্ত হয়েই জাহাজের ডেকে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, মোট সাতটি জাহাজকে বেআইনি ঘোষণা করেছে শারজা বন্দর কর্তৃপক্ষ। ফলে জাহাজগুলির সমস্ত পদাধিকারী থেকে শুরু করে সবার পাসপোর্ট আটকে রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জাহাজে কার্যত বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ৩১ জন ভারতীয়। আটক ভারতীয়দের মধ্যে দুইজন বাঙালি রয়েছেন। বাকি সব অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দা। দেড় বছর তাঁরা কোনও বেতনও পাচ্ছেন না বলে মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন যাগ্নিকবাবু। তিনি বলেন, “পরিবার ছেড়ে প্রায় দেড় বছর জাহাজে আটকে রয়েছি। বেতনও ঢুকছে না। খুব চিন্তায় রয়েছি।” যাজ্ঞিকবাবুর পরিবার থাকেন মেদিনীপুর শহরে। স্ত্রী ছন্দা মুখোপাদ্যায় মেদিনীপুর বিশ্বাবিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা। তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে। মা অমিতা মুখোপাধ্যায় ৭০ ছুঁইছুঁই। ছন্দাদেবী বলেন, “ দুটি বাচ্চা ও বৃদ্ধা শ্বাশুড়িকে নিয়ে খুবই চিন্তায় রয়েছি। কী যে করব কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা খুবই অসহায় হয়ে পড়ছি।”
[কর্মবিরতি প্রত্যাহার কর্মীদের, অচলাবস্থা কাটল হলদিয়া বন্দরে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.